হুগলীর তীরে প্রিয় শহর কলকাতায়, পর্ব-2


চলচ্চিত্র ও ভ্রমণ লেখক লিয়াকত হোসেন খোকন ভারত ভ্রমণ করেছেন ষাটেরও বেশি বার। লেখকের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে আছে তিলোত্তমা নগরী প্রাণবন্ত কলকাতা। বারবার ভ্রমণের সেই অভিজ্ঞতা লেখক প্রান্জল ভাষায় ধারাবাহিকভাবে লিখছেন সাগরপারের পাঠকদের জন্য। আজ প্রকাশিত হল দ্বিতীয় পর্ব।

প্রথম পর্বের লিংক এখানে

কলকাতার এন্টালি -টালিগঞ্জ – বন্দর – বেলেঘাটা -গোবিন্দপুর -মতিঝিল -কসবা -সাতপুকুর ঘুরে দেখার কথা খুব করে মনে পড়ে।

এন্টালি অঞ্চলটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা মহানগরীর মধ্য কলকাতায় অবস্থিত।

এই অঞ্চলের বিধানসভা কেন্দ্র – এন্টালি।

এক সময় হতাশাব্যাঞ্জিত সম্প্রদায়ের বাসিন্দা

পাড়া বা অঞ্চলের কাছাকাছি বলে বিবেচিত হত

এন্টালি।

 

মাদার তেরেসা তাঁর কার্যক্রম শুরু করেছিলেন এই এন্টালিতে। হেনরি লুই ভিভিয়ান ডেরোজিও ছিলেন এন্টালির বাসিন্দা।  তাঁর জন্ম তারিখ ১৮০৯ সালের ১৮ এপ্রিল – জন্মস্থান কলকাতার এন্টালি – পদ্মপুকুর অঞ্চলে। আর মৃত্যু ১৮৩১ সালের ২৬ ডিসেম্বর কলকাতার  এন্টালিতে।

 

হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর পিতা ফ্রান্সিস ডিরোজিও ছিলেন একজন খ্রিস্টান ইন্দো – পর্তুগিজ অফিস কর্মী  এবং তাঁর মাতা ছিলেন সোফিয়া জনসন ডিরোজিও – একজন ইংরেজ মহিলা।

 

হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও’র আসল পারিবারিক নাম ছিল ডি রোজারিও। তিনি ছিলেন

ইউরোপের একজন পর্তুগিজ ও কবি, যুক্তিবাদী চিন্তাবিদ ও শিক্ষক।

কলকাতার হিন্দু কলেজের শিক্ষক

ছিলেন তিনি। হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও ইংরেজি সাহিত্য ও ইতিহাস পড়াতেন হিন্দু কলেজে। তাঁর পাঠ্যদানের পদ্ধতি ছিল তার নিজস্ব ধ্যান – ধারণার মতোই গতানুগতিকতামুক্ত।

 

প্রকৃতপক্ষে শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মকাণ্ড

শ্রেণিকক্ষে সীমাবদ্ধ ছিল না – ছাত্রদের আগ্রহ সৃষ্টিকারী যে কোনো বিষয়ে তিনি তার

ছাত্রদের সঙ্গে কলেজ প্রাঙ্গণের বাইরেও, প্রায়ই তাঁর নিজের বাসায়, আলোচনা করতে

সদা – ইচ্ছুক ছিলেন।

 

হেনরি-লুই-ভিভিয়ান-ডিরোজিয়ো
হেনরি-লুই-ভিভিয়ান-ডিরোজিয়ো

 

বাস্তবে তাঁর আলোচনার বিষয়বস্তুর পরিসীমা ছিল বহুবিস্তৃত – সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন এবং বিজ্ঞান নিয়ে।

হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও একজন

নৃত্যশিল্পীও ছিলেন।

মাত্র বাইশ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু –

নব্যবঙ্গ দল গঠন

ভারতের জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে অমর করে রেখেছে এই হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওকে।

তিনি আগাগোড়া এন্টলির বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর দীর্ঘকাল পরেও তাঁর অনেক ছাত্রের তাঁর উত্তরাধিকার বেঁচেছিলেন।

তাঁদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তীকালে সমাজ সংস্কার, আইন এবং সাংবাদিকতায় বিশিষ্ট স্থান দখল করেছিলেন।

এন্টালির নিকটতম মেট্রো স্টেশন হ’ল শিয়ালদহ।

 

কলকাতা পৌর সংস্থার ৫৪ নং, ৫৫ নং ও ৫৬ নং ওয়ার্ড  নিয়ে এন্টালি অঞ্চলটি ।

এন্টালির বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে  বিধায়ক হিসেবে আবারও তৃণমূল কংগ্রেস থেকে লড়বেন স্বর্ণকমল সাহা।

স্বর্ণকমল সাহা হলেন একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ, যিনি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে যুক্ত। তিনি তিনবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

 

বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহার নেতৃত্বে তাঁর সহকর্মীরা

ইতোমধ্যে ক্রিস্টেফার রোডের ৪০০ টি বাড়িতে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিয়েছেন।

টালিগঞ্জ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ কলকাতার একটি অঞ্চল।

 

টালিগঞ্জের উত্তরসীমায় পূর্ব রেলওয়ের দক্ষিণ শহরতলীর লাইন ;

পূর্ব দিকে লেক গার্ডেন্স ও গলফ গ্রিন –

দক্ষিণ – পশ্চিমে পুটিয়ারি ও পূর্ব পুটিয়ারি।

এবং পশ্চিমে নিউ আলিপুর ও বেহালা অবস্থিত।

টালিগঞ্জের মেট্রো স্টেশন হ’ল – টালিগঞ্জ।

কলকাতার দ্য ফার্দিনান্দ দে লেসন্স মেজর উইলিয়াম টলির নামে টালিগঞ্জ নামকরণ করা হয়।

টলি সাহেবই ১৭৭৫ – ৭৬ সালে কলকাতার সঙ্গে আসাম বা অসম ও পূর্ববঙ্গের যোগসূত্র হিসাবে টালির নালা খনন ও ড্রেজ করার কাজ শুরু করেন।

টালির নালাটিও টলি সাহেবের নামেই নামাঙ্কিত।

 

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি টলি সাহেবকে এই নালা দিয়ে যাতায়াতকারী নৌকাগুলি থেকে টোল আদায় ও নালার ধারে একটি গঞ্জ বা বাজার স্থাপনের অনুমতি দিয়েছিল।

১৭৭৬ সালে তাঁর এই স্বপ্নের প্রকল্পটি সম্পন্ন হয় এবং পরের বছরেই এটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই এই সতেরো মাইল দীর্ঘ খালটি টালির নালা বা টলি’জ ক্যানেল ও তার প্রতিষ্ঠিত বাজারটি টালিগঞ্জ নামে পরিচিত হয়ে গেল।

 

নালার পূর্ব পাড়ে বর্তমান টালিগঞ্জ রোডের কাছেই এই বাজারটি অবস্থিত ছিল – সে কথা কেউ জানে না। বর্তমান প্রজন্ম জানতেও চায় না।

বর্তমানে টালির নালার দু’ধার পাল্টে হয়েছে আধুনিক নগরায়ন আর এই অঞ্চল আজ স্বপ্নের টালিগঞ্জ। চারিদিক করে আজ রূপে ঝলমল – এ যে হ’ল কলকাতা মহানগরীর টালিগঞ্জ এলাকা।

টালিগঞ্জ আজ কলকাতার অন্যতম প্রধান একটি অঞ্চল। পশ্চিমবঙ্গের বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের কেন্দ্র টলিউড এই টালিগঞ্জে অবস্থিত – টালিগঞ্জও হলিউড নামের মিশ্রণে নামাঙ্কিত।

 

কলকাতা মেট্রোর মহানায়ক উত্তম কুমার স্টেশনটি টালিগঞ্জ অঞ্চলের যাত্রী পরিষেবা প্রদান করে – এটি আগে কলকাতা মেট্রোর দক্ষিণের প্রান্তিক স্টেশন ছিল। টালিগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনটি কলকাতা শহরতলী রেলওয়ের বজবজ শাখার লাইনে অবস্থিত।

টালিগঞ্জের উল্লেখযোগ্য দ্রষ্টব্য স্থান হ’ল –

রবীন্দ্র সরোবর জাতীয় হ্রদ বা ঢাকুরিয়া লেক ;

টালিগঞ্জ সিনেমাপাড়া – ইন্দ্রপুরী ফিল্ম স্টুডিও, টেকনিশিয়ান স্টুডিও – এনটি ১ ও এনটি ২ এবং ক্লাব ; রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাব ; আই টি সি সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমি ; নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসু রোডের শ্বেতাম্বর জৈন মন্দির ; মালঞ্চ সিনেমা হল ; চার্নক সিটি ২ ; এম জি রোডের করুণাময়ী কালীমন্দির ; প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে সাউথ সিটি শপিং মল ; মেনকা সিনেমা হল ; মধুবন সিনেমা হল ; উত্তম কুমারের মর্মরমূর্তি ; টালিগঞ্জ রোডে সাধু তারাচরণের আশ্রম ; নাট্যকার ও অভিনেতা উৎপল দত্তের বাসভবন ; স্পেনসার্স রিটেল স্টোর – ডেইলি অ্যান্ড এক্সপ্রেস।

আরও পড়ুন: তুরস্কের আন্টালিয়ার একটি মনোরম রিসোর্টে কয়েকদিন

 

টালিগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ –

ক্যালকাটা ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ;

গণযোগাযোগ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন স্টাডিজ ইনস্টিটিউট ;

ফটোগ্রাফি জাতীয় একাডেমি ;

মনসুর হাবিবুল্লাহ মেমোরিয়াল স্কুল ; নর্দমা হাই স্কুল ;

শ্রুতিনন্দন ; বিডি মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট ;

মিলনগড় গার্লস হাই স্কুল – ইত্যাদি।

 

বন্দর –

কলকাতা পোর্ট বা বন্দর কলকাতা মহানগরীতে অবস্থিত একটি নদী বন্দর। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই বন্দরটির গোড়াপত্তন করেছিলেন। বর্তমানে ভারতের চালু বন্দরগুলির মধ্যে এই বন্দরটি প্রাচীনতম।

 

kokatha port

 

২০১৫ সালের হিসাবে কলকাতা বন্দর বিশ্বের ৮৫ তম ব্যস্ত বন্দর – এটি পরিচালনা করে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

পোতাশ্রয়ের প্রকার – নদী বন্দর, গভীর সমুদ্র বন্দর।

প্রধান আমদানি দ্রব্য – যন্ত্রপাতি ; খনিজ তেল, রাসায়নিক সার ; কাঁচা সুতা ; ইস্পাত ; অটোমোবাইল।

প্রধান রপ্তানি দ্রব্য – পাট ও পাটজাত দ্রব্য ; সুতির বস্ত্র ; চামড়া ; লৌহ ; খনিজ ; কয়লা ; ম্যাঙ্গানিজ ; ফ্লাইস ওস প্রভৃতি।

ডক ও জেটি – ৩ টি। খিদিরপুর ডক ; নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ডক ও হলদিয়া ডক।

এছাড়া রয়েছে বজবজ তরল পণ্য জেটি।

 

ঊনবিংশ শতাব্দীতে কলকাতা বন্দর ছিল ব্রিটিশ ভারতের প্রধান বন্দর।

বিংশ শতাব্দীর সূচনায় পূর্ব ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন ও পরিকাঠামোগত উন্নতির ফলে বর্তমানে কলকাতা বন্দর ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মালবাহী বন্দরে পরিণত হয়েছে।

 

মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের নিকট হতে বাণিজ্য সনদ লাভের পরই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কলকাতা বন্দরের গোড়াপত্তন ঘটায়।

ভারত শাসনভার কোম্পানির হাত থেকে ব্রিটিশ সরকারের হাতে হস্তান্তরিত হলে – ১৮৭০ সালে ব্রিটিশ সরকার বন্দর কমিশন গঠন করে।

বন্দর শহর হিসেবে কলকাতার উত্থানের পেছনে নৌ গুরুত্ব স্পষ্ট প্রতীয়মান – কেননা ষোল শতক থেকেই গঙ্গার ভাগীরথী – হুগলি প্রবাহ বরাবর এর ভাটির দিকে বাণিজ্য বসতি ক্রমশ গড়ে উঠেছিল। কালক্রমে গঙ্গার এককালের প্রধান শাখা হুগলি ক্রমশ বড় জাহাজের জন্য অকার্যকর হয়ে পড়ছিল এর পলিজনিত সমস্যার কারণে। কেননা নদীর পানির বিরাট অংশ প্রবাহিত হতো পূর্বমুখী শাখা নদীগুলি দিয়ে। সে সাথে হুগলির আঁকাবাঁকা গতিপথ ছিল বড় বড় জাহাজ চলাচলের জন্য কঠিন। উপরন্তু উজানের দিকে হুগলি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়ায় নৌচলাচল আরও অসুবিধাজনক হয়ে ওঠে। ষোল শতকের প্রথম দিকে বাংলার এ অঞ্চলের সাথে ইউরোপীয়দের মধ্যে প্রথম যোগাযোগ স্থাপনকারী পর্তুগিজদের আগমনের পূর্ব থেকেই হুগলি নদীর উজানে বাণিজ্য বসতি থেকে গৃহীত শুল্ক গঙ্গার নৌব্যবস্থায় পরিবর্তন সূচিত করে। ষোল শতকের শেষের দিকে পর্তুগিজদের বড় বড় জাহাজগুলি বেতরে এসে থামত। বেতর ছিল কলকাতার উপকন্ঠস্থ একটি স্থান।

 

পরবর্তীতে বন্দর চলে আসে কলকাতা বন্দরে – ১৭৯০ সালে বাঁকশাল ঘাটের নিকটে প্রথম ডক নির্মাণ করা হয়। ঊনিশ শতকের শেষের দিকে ১৮৯২ সালে খিদিরপুরে ডক নির্মাণ করা হয় – কলকাতা বন্দর ক্রমশ একটি বাণিজ্যিক বন্দর তথা পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হয়ে ওঠে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল। জাপানি সেনাবাহিনী ওই সময় দুই বার কলকাতা বন্দরের উপর বোমাবর্ষণ করেছিল।

 

কলকাতা বন্দরে ২০৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল বা প্রবেশ পথ রয়েছে। এটি হুগলি নদীর মোহনা থেকে শুরু হয়ে কলকাতা মহানগরীর কাছে কলকাতা ডক পর্যন্ত বিস্তৃত। চ্যানেলটি গড়ে ৭ মিটার বা ২৩ ফুট গভীর।

বেলেঘাটা –

বেলেঘাটা  কলকাতার একটি অঞ্চল বা পাড়া।।

এই অঞ্চলটি কলকাতার উত্তরে অবস্থিত।

বেলেঘাটা অঞ্চলটিকে কেউ কেউ বলেন –

বেলিয়াঘাটা বা বেলেগাটা।

এই দুই নামেও পরিচিত বেলেঘাটা।

বেলেঘাটার প্রধান আকর্ষণ জোড়া মন্দির।

 

বেলেঘাটা ও বাইপাসের কেন্দ্রস্থলে উঁচু টিলায় অবস্থিত স্বভূমি বা হেরিটেজ পার্ক – এখানে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের হস্তশিল্প ও প্রদর্শনী সারা বছর ধরে হয়ে থাকে। এখানে বিভিন্ন হস্তশিল্পের দোকান, রেস্টুরেন্ট ও অডিটোরিয়াম আছে।

বেলেঘাটার নিকটতম মেট্রো স্টেশন –

শিয়ালদহ, ফুলবাগান ও বেলেঘাটা,  কিন্তু এই মেট্রো স্টেশনের কাজ এখন পর্যন্ত নির্মাণাধীন।

বেলেঘাটা অঞ্চলটি কলকাতা পৌর সংস্থার –

৩৩ নং, ৩৪ নং, ৩৫ নং ও ৩৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।

এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য হাসপাতাল হ’ল –

আইডি এ্যান্ড বিজি হসপিটাল।

 

এই জনপদে রয়েছে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হ’ল –

বেলেঘাটা দেশবন্ধু হাই স্কুল ;

দেশবন্ধু গার্লস হাই স্কুল।

উল্লেখযোগ্য সড়ক হ’ল –

অবিনাশ চন্দ্র ব্যানার্জী রোড এবং আরও আছে।

এই জনপদের জনপ্রিয় নেতা হলেন পরেশ পাল।

মানিকতলা বিধানসভার অন্তর্গত কাঁকুড়গাছির এপিসি পার্কের ইলিশ উৎসব মানেই – যার নাম সবাই বলে  তিনি হলেন বিধায়ক

পরেশ পাল। তিনি বেলেঘাটার জনদরদী নেতা।

 

বেশ বড় করে ধূমধাম সহকারে কালীপূজা তো

করেনই।

সেই পূজায় নিমন্ত্রণ করেন হাজার হাজার

মানুষকে – একবার সেই কালীপূজা দেখার সৌভাগ্য আমারও হয়েছিল।

শোনা যায়, একবার নাকি কলকাতায় মশা বাহিত রোগ বাড়ছে বলে ধর্মতলায় প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে রাস্তায় বিশাল একটা মশারী টাঙ্গিয়ে দেয়ার আইডিয়া দিয়েছিলেন তিনি  –

আরেকবার আইডিয়া দিয়েছিলেন গরু – ছাগল নিয়ে গিয়ে পথ অবরোধ করার।

জানা যায়, পরেশ পালের একটা টিম আছে যারা ২৪ ঘন্টাই এলাকায় তৎপর থাকে। যে কোনো মানুষ বিপদে পড়লে – তারা এগিয়ে যায় তাদের

সাহায্যার্থে । এ ব্যাপারে পরেশ পাল যথেষ্ট সচেতন, তিনি বেলেঘাটার সর্বশ্রেণীর মানুষের

বিপদে আপদে ছুটে যান বলে বেলেঘাট অঞ্চলের জনগণ তাকে ছাড়া আর কিছুই বোঝে না।

তবে এ কথা শুনেছিলাম, বেলেঘাটার কয়েকজন  বাসিন্দার সঙ্গে আলাপের সূত্র ধরে।

 

এও শুনেছি , তাঁর জন্মস্থান বাগেরহাটে তাঁর মামাবাড়িতে। ভারত ভাগ হওয়ার এক বছর আগে চলে যান কলকাতায় – পূর্ব কলকাতার কাঁকুড়গাছি এলাকায় তিনি বেড়ে উঠেছেন।

বেলেঘাটার এক বাসিন্দার মুখে শুনেছি,

তিনি শৈশবে তাঁর এক বোনকে হারান – সেই দুঃখ তিনি আজও ভুলতে পারেননি আর এই জন্যই দুস্থ মেয়েদের সাহায্য করে আসছেন বহু বছর ধরে। শুধু তাই না, দরিদ্র মানুষের জন্য তিনি নিবেদিত সদাসর্বদা।

পরেশ পাল একেবারে ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছেন বামপন্থী দল আরএসপি নেতা মাখন পালের কাছে।

জনগণের কল্যাণ করে যাওয়া পরেশ পালের জীবনের আদর্শ – তিনি একজন আদর্শবাদী রাজনীতিবিদ।

 

আশুতোষ কলেজ –

কলকাতার আশুতোষ কলেজের নামধাম

শুনেছিলাম

সেই শৈশব থেকেই –

আশুতোষ কলেজে পড়তে পারিনি –

এ জন্য দুঃখ তো কিছুটা আছেই

কিম্বা থাকতে তো পারেই।

কলকাতা গিয়ে

বেশ কয়েকবার এই কলেজে গিয়েছি। কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ করেছি,

তারা আমাকে কলেজ ঘুরিয়ে দেখিয়েছে।

 

এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তো

বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল –

সে কথা আজ খুব করে মনে পড়ে।

আশুতোষ কলেজ হ’ল

দক্ষিণ কলকাতার যতীন দাস পার্ক মেট্রো

স্টেশনের কাছেই অবস্থিত।

জানা যায়, ১৯১৬ সালে

সাউথ সুবার্বন কলেজ নামে

শিক্ষাবিদ স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের কর্মদক্ষতায় এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়,

সেই সময়কালে তিনি

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন।

 

স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ১৮৬৪ সালের ২৯ জুন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী শহর কলকাতার বউবাজারের মলঙ্গা লেনে একটি ভাড়াটিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন – তাঁর পিতা গঙ্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সে সময় ভবানীপুর অঞ্চলের বিখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন।

তাঁদের আদিবাস ছিল হুগলি জেলার জিরাট – বলাগড় গ্রামে।

আগাগোড়া মেধাবী ছাত্র আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ১৮৭৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৮৮৪ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ডিগ্রি ও ১৮৮৫ সালে গণিতে এম এ পাস করেন – এরপরে তিনি পদার্থ বিদ্যায় এম এ ডিগ্রি লাভ করেন।

পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ জ্যামিতির ওপর তার কাজের স্বীকৃতি প্রদান করে।

আশুতোষ মুখোপাধ্যায় স্বাধীনচেতা মাুনষ ছিলেন বলে এক সময় তিনি কলকাতা হাইকোর্টে যোগ দিয়ে আইন ব্যবসা শুরু করেছিলেন।

তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পর পর দু’বার উপাচার্য পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

তাঁর পুত্র হলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।

 

১৯২৪ সালের ২৫ মে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় পাটনায় মৃত্যুবরণ করেন।

স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের জীবনাবসানের পর কলেজটির

পুনর্নামকরণ করা হয় আশুতোষ কলেজ।

জানা যায়,

২০১৫ খ্রীস্টাব্দের ১ এপ্রিল আশুতোষ কলেজের শতবার্ষিকী ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন ভারতের ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।

২০০৯ থেকে ২০১৪ খ্রীস্টাব্দের সময়কালে ফলিত ভূতত্ত্ব, বাংলা, কম্পিউটার বিজ্ঞান, তথ্য বিজ্ঞান, ভূবিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান বিষয়সমূহে স্নাতকোত্তর পাঠক্রম প্রবর্তন করা হয়েছিল এই কলেজে।

 

২০১৩ খ্রীস্টাব্দে হাসপাতালের বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, শিল্প রসায়ন এবং ভ্রমণ ও

পর্যটন বিষয়ে অ্যাড -অন পাঠক্রম চালু করা হয়েছিল।

আশুতোষ কলেজ দেখার স্মৃতি মনকে

আজও উদ্বেলিত করে।

কলকাতার আশুতোষ কলেজে যাঁরা শিক্ষার্থী ছিলেন তাঁদের মধ্যে সর্বাগ্রে যাঁর নাম বলতে হয় তিনি হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিনেতা – লেখক – কবি – রাজনীতিবিদ – গায়ক – ক্রীড়াবিদ  ও উল্লেখযোগ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা হলেন –

ধীরাজ ভট্টাচার্য – নায়ক

 

কলকাতায় গোবিন্দপুরটা ঠিক কোথায়?

কলকাতায় গোবিন্দপুরটা ঠিক কোথায়? তা নিয়ে কলকাতার বাসিন্দারা তেমন একটা মাথা ঘামান না। তবে কলকাতায় বেড়াতে গিয়ে অনেকেই জানতে চান, দেখতে চান গোবিন্দপুরকে। কেউ কি গোবিন্দপুরকে দেখতে পেয়েছেন?

বাংলা সাহিত্যে গোবিন্দপুর জায়গাটার পেছনে ধাপধাড়া নামে এমন বিশেষণ বসে সেই স্থানকে অখ্যাতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছে অনেককাল আগে থেকেই। ধাপধাড়াকে আবার ধ্যাধধেড়েও বলে রসিকতা করেন অনেকেই।

 

এমনকি কোনো জ্ঞাতিগুষ্টির বাড়ি নিমন্ত্রণ রাখতেও যাওয়ার অনীহা প্রকাশেও দাদী, নানীকে ব্যাঙ্গার্থে এই শব্দবন্ধের প্রয়োগ করতে শুনেছি, ধ্যাধধেড়ে গোবিন্দপুরটা ঠিক কোথায়?

বিশেষ করে বিয়ের কনে দেখতে গিয়ে পাত্রপক্ষের যেন পাত্রীপক্ষের বাড়ির অক্ষাংশ -দ্রাঘিমাংশকে হেয় না করলেই নয়। অথচ তাঁরা জেনে বুঝেই যাচ্ছেন সেখানে। তারপরও বলতেন, ধ্যাধধেড়ে গোবিন্দপুরটা ঠিক কোথায়।

প্রত্যন্ত শহরতলী বা অচেনা, অজ্ঞাত কোনো জায়গায় যাওয়ার আগে যে কেউ এখন এসব বলে না, কারণ এখন দিশা দেখানোর জন্য অধিকাংশ মানুষের হাতের মুঠোয় মোবাইল ফোন আর এই  মোবাইলে ঢুকলে গুগল ম্যাপ পাওয়া যায়।

 

বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার অন্যতম এক গ্রাম ছিল গোবিন্দপুর। গোবিন্দপুর গ্রামটি ছিল গঙ্গার ধারে। কলকাতার বউবাজারের আশেপাশের অঞ্চলই সেসময়ের গোবিন্দপুর।

সেই গোবিন্দপুরের কাছ থেকে একটা খাল বয়ে গেছিল আজকের ইস্টার্ন মেট্রোপ্লিটান বাইপাসের পাশে ধাপা পর্যন্ত। এই খাল ধাপার ভেতর দিয়ে বয়ে বিদ্যেধরী নদীর সঙ্গে মিশেছিল। আজকের বাইপাসে চিংড়িহাটা অঞ্চলে এই খালের পাশে ধাড়া অর্থাৎ একরকম ট্যাক্স আদায় করার জন্য জমিদারের পেয়াদা পাহারায় থাকতেন। সব বাণিজ্য নৌকোকেই এই অঞ্চলের ক্যানাল দিয়ে যাওয়ার সময় এই কর বা ট্যাক্স দিয়ে যেতে  হত।

 

এই জায়গা অতীতে বেশ দুর্গম ছিল, তাই ধীরে ধীরে ধাপধাড়া গোবিন্দপুরের মানে হয়ে ওঠে পাণ্ডববর্জিত জায়গা।

কলকাতার আজ যেখানে সুবোধ মল্লিক বা ওয়েলিংটন স্কোয়ারের পেছনে ক্রিক রো, সেখান দিয়েই এই খাল বয়ে গেছিল। ক্রিক শব্দের মানে হল সংকীর্ণ নদী বা খাল। তখন বিদ্যেধরী বড়ো নদী বা খাল ছিল – এই নদী বা খাল এঁকেবেঁকে চলে মাতলা নদীতে গিয়ে পড়ত। কালে কালে তা মজে গেছে বা বিলুপ্ত হয়েছে দখলবাজদের অত্যাচারে। শুধু তাই নয়, দ্রুত শহরায়ণের ফলে এসব রাস্তাঘাট ভরাট হতে হতে আগেকার সেই প্রত্যন্ত জায়গা বাসযোগ্য হয়ে উঠেছে ঠিকই কিন্তু সে যুগে লোকজন সেসব বা ঐসব জায়গায় যেতে বেশ ভাবনাচিন্তা করতেন।

 

আজ সকল শ্রেণির মানুষজনরা তুমুল শহরায়ণের শামিল হয়ে জল -জঙ্গলে ভরা বিপদসংকুল আদি কলকাতাকে ভুলে গেছে। কিন্তু এই শব্দবন্ধ আজ আর কলকাতাবাসীকে মনে করায় না। কেউ আর চেনে না গোবিন্দপুর জায়গাটা। তারপরেও বলতে হয় ক’জনেই বা তা মনে করেন গোবিন্দপুরকে ? আজকে যারা কলকাতার বাসিন্দা তাদের কাছে গোবিন্দপুর, খাল, বিদ্যেধরী নদী, গ্রাম ইত্যাদি অজানা। গোবিন্দপুরটা ঠিক  কোথায়? কলকাতায় গিয়ে তা কাউকে জিজ্ঞেস করলেই তিনি  এবং উপস্থিত জনতা হো হো করে হেসে উঠে বলবেই, পাগলটা কোথা থেকে এসে মিথ্যে গল্প শুরু করে দিয়েছে গো। কলকাতায় আবার ধ্যাধধেড়ে  গোবিন্দপুর এলো কোথ থেকে রে? পাগলে কি বলে হে!

তবে গোবিন্দপুর জায়গাটা না চেনার কারণটি হলো ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণের সময় গোবিন্দপুর গ্রামটি ধ্বংস করে ফেলা হয়েছিল।

তাই ভারতের বিজেপি সরকার ফোর্ট উইলিয়াম নাম মুছে দিয়ে গোবিন্দপুর নামটি পুনরায় দিলে কলকাতাবাসী তাদের অতীতের সেই গোবিন্দপুরকে আবার চিনতে – জানতে পারবেন।

 

মতিঝিল –

কলকাতা মহানগরীর দমদম এলাকার দক্ষিণ দমদমে এই মতিঝিল।

বিশাল ঝিল মতিঝিল – আজ আর তা নেই!

দমদমের এই মতিঝিলের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে বাংলার নবাবী আমলের ইতিহাস।

কিন্তু এক সময় মাফিয়াদের দাপটে দমদমের মতিঝিলের ঐতিহ্য বিপন্ন হতে শুরু করে।

তবে এখানে দিনের পর দিন বিল বুজিয়ে গড়ে উঠেছে কলোনি।

মতিঝিলের ভরাট করা জমিতে মাথা তুলেছে বহুতল ভবন –

কোথাও আবার তার উপর দিয়ে রাস্তা বানানো হয়েছে। নির্বিচারে আবর্জনা ফেলায় মতিঝিলের যেটুকু ঝিল আছে – সেই ঝিলের নাব্যতা একেবারে তলানিতে ঠেকেছে।

 

মতিঝিল পার্ক

 

পরিণামে দমদম মতিঝিল এখন বস্তুত সরু খালে পরিণত হয়েছে।

তবে দেরিতে হলেও তা সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতার মহানগরীর নগরোন্নয়ন দপ্তর।

মুর্শিদাবাদের নবাব পত্নী মতিবিবির নামানুসারে মতিঝিলের নামকরণ। সেই নবাবী আমল থেকে দমদমে মতিঝিলের অস্তিত্ব বলে ইতিহাস বলে।

ইতিহাস বলে, বিশাল আকারের ঝিল ছিল এখানে।

নাব্যতা ছিল – ছিল ঝিলের জলে সচ্ছ্ব ধবধবে সাদা রং।

বড় আকারে অনেক বড় ছিল মতিঝিল।

 

দমদম মতিঝিলের পাশে করুণা কিশোর বিদ্যালয়ের লাগোয়া জমিতেই মতিবিবির একটি বাসগৃহ ছিল।  ঝিলকে কেন্দ্র করে পরবর্তীকালে দমদমে নতুন জনপদ গড়ে ওঠে।

সেখানে প্রায় সব কিছুই মতিঝিলের নামে –

মতিঝিল অ্যাভিনিউ ; মতিঝিল কলেজ ; দমদম মতিঝিল রবীন্দ্র মহাবিদ্যালয়।

দমদমের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে মতিঝিলের নাম।

দমদম বিমান বন্দরের পর দমদম মতিঝিল নামটাই সবচেয়ে জনপ্রিয়।

কিন্তু যার নামের এত কদর, সেই মতিঝিল বহু বছর ধরে অনাদরে পড়েছিল।

সুযোগ বুঝে মাফিয়া চক্র করেছে দখল।

 

শুনেছি, মাঝে মধ্যে খুচখাচ সংস্কার হলেও তাতে কাজের কাজ বিশেষ হয়নি।

তবে দেরিতে হলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার মতিঝিল সংস্কারে এগিয়ে আসায় খুশি দমদমের বাসিন্দারা।

জানা যায়, এক সময় এই বিশাল মতিঝিলের ঝিলের জলে অনেকেই স্নান করেছেন – সাঁতার কেটেছেন। তাঁরা আজ বয়সে প্রবীণ। শুধু স্মৃতি আর স্মৃতি নয় কি!

কলকাতার দমদম এলাকার মতিঝিলের বিরাট একটা অংশ বেদখল হয়ে যাওয়ায় আগের চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়া আর হয়তো সম্ভব হবে না কোনোদিন।

দখলে – দুষণে এ ভাবে চারিদিকে চলছে দখলদারিত্ব।

 

চারিদিকে ভূমিদস্যু বা মাফিয়াদের কারণে রাষ্ট্র হারাচ্ছে  রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ”

সুতরাং প্রকৃতি প্রেমিক হিসেবে অনুরোধ জানাবো, দরকার হলে অবৈধ দখলদারিত্ব চিরতরে নির্মূল করতে ঝিল দখল করে যে সব স্থাপনা গড়ে উঠেছে তা উচ্ছেদ করা হোক। দখলবাজ তথা মাফিয়াদের উচিত শিক্ষা দেয়া উচিত।

কলকাতা বেড়াতে গিয়ে আবার আমরা দেখতে পাব মতিঝিল পূর্ণাঙ্গ এক সচ্ছ্ব ধবধবে সাদা রঙের জলের  জলাশয় – তাহলে আমরা খুশি হবো।

আর আমাদের বাংলাদেশের ঢাকার মতিঝিলের সেই ঝিল বহু আগেই কবিতায় ঠাঁই নিয়েছে – বাস্তবে ঢাকার মতিঝিলের সেই ঝিল কোথায় আজ লুকিয়ে গেল ?

 

কসবা –

কসবা এলাকাটি  কলকাতা মহানগরীর দক্ষিণ কলকাতার একটি অঞ্চল।

বিজয় সেতু – কসবা এবং বালিগঞ্জের মধ্যে সংযোগকারী।

কসবা অঞ্চলটি কলকাতা পৌর সংস্থার ৬৭ নং, ৯১ নং ও ১০৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত।

কসবার লোকসভা কেন্দ্র হ’ল – কলকাতা দক্ষিণ।

বিধানসভা কেন্দ্র হ’ল – কসবা বিধানসভা কেন্দ্র।

কসবার থানাটি বোসপুকুর রোডে অবস্থিত।

কসবা থানাটি ২০১১ সালে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলা থেকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়।

কসবা শব্দটির অর্থ হিন্দি এবং বাংলাতে একই অর্থ – আরবী কাসবাহ – এরও একই অর্থ।

 

কসবার উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হ’ল –

দোলনা ডে স্কুল ; রুবি পার্কের নিকটস্থ দিল্লি পাবলিক স্কুল ;

গার্ডেন হাই স্কুল ; সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুল ;

হেরিটেজ হাই স্কুল ; চারুচন্দ্র কলেজ ;

নাবা বালিয়াঙ্গে মহাবিদ্যালয় ;

কসবা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ; বিবেকানন্দ বিদ্যানিকেতন ;

কিডজি হাই স্কুল ; চিত্তরঞ্জন হাই স্কুল ;

মেঘনাদ সাহা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ;

বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি।

কসবার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হ’ল –

কসবা গোলপার্ক রুবি জেনারেল হাসপাতাল ;

দেশুন হাসপাতাল ;

মেঘালয় হাউস ; এ এম ই সি মিউজিক স্কুল ;

ইউনিটেক চেম্বার ও মল ;

জেনেসিস হাসপাতাল ; কসবা নিউমার্কেট বা সাউথহেন্ড কনক্লেভ ; কসবা পূর্ব আবাসন ;

গার্ডেন হাই স্কুলের নিকটে অ্যাক্রপোলিস মল ;

সিনেমাপোলিস মুভি প্লেক্স ; অ্যাক্রোপলিস বিল্ডিং ;

হিমালয় অপটিক্যালস ; খাদিম জুতোর দোকান ;

নারকেল বাগানের নিকট আরামবাগ ;

বোসপুকুর শীতল মন্দির ;

জি কে বি অপটিক্যালস।

উল্লেখযোগ্য রেস্তোরাঁ হ’ল –

ব্লু ইটারি ; মিংস রেস্তোরাঁ ; এইচ টু রেস্তোরাঁ।

কসবার উত্তরে তিলজলা এলাকা, সাহেব বাগান ;

পশ্চিম দিকে বালিগঞ্জ ; দক্ষিণে কবরডাঙ্গা, রাজডাঙ্গা ও হালতু এবং পূর্ব দিকে রবীন্দ্র পল্লী ও নারকেল বাগান।

 

সাতপুকুর

সাতপুকুর এলাকাটি  কলকাতা মহানগরীর একটি অঞ্চল।

সাতপুকুর এলাকার বিধানসভা কেন্দ্র হ’ল –

কাশিপুর – বেলগাছিয়া।

সাতপুকুর এলাকার লোকসভা কেন্দ্র হ’ল –

কলকাতা উত্তর সংসদীয় সংসদ।

সাতপুকুরের নিকটবর্তী এলাকাগুলি হ’ল – গোশলা বাসি ; পাইকপাড়া ; তালা ; কাশিপুর ; সাতছশিপাড়া।

সাতপুকুরের নিকটবর্তী জনবহুল এলাকা বা শহর হ’ল –

দক্ষিণ দমদম ; বরাহনগর ; বিধাননগর।

সাতপুকুরের কাছের রেলওয়ে স্টেশন হ’ল – দমদম জংশন রেলওয়ে স্টেশন ও তালা রেলওয়ে স্টেশন।

সাতপুকুরের উপশহর –

দমদম রোডের রামলীলা বাগান ; সাতটি ট্যাঙ্ক লেনের রাজা বাগান লেন ; দক্ষিণ সিনথে রোডের সোবজি বাগান।

সাতপুকুরের মন্দির – হনুমান মন্দির ;

রাজ রাজেশ্বরী দুর্গা দেউল ; মধুগড় দুর্গামণ্ডপ।

মসজিদ আছে, যেমন –

গাঙ্গুলি প্যারা লেনের পাইকপাড়া মসজিদ ;

শহীদ ক্ষুদিরাম বসু সরণির চাসিপাড়া মসজিদ ;

তালার দত্ত বাগান মসজিদ।

সাতপুকুরের হাসপাতাল –

থিসিজম পলিক্লিনিক ; থিসিজম মেডিকেল ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

সাতপুকুরের উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হ’ল –

ইন্ডিয়ান উইজডম হাই স্কুল ; কেন্দ্রীয় হাই স্কুল ;

ইয়ং হরাইজন্স হাই স্কুল ; ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল।

চিত্তরঞ্জন পার্ক – সাতপুকুরের

এই পার্কটি দমদম আরডি, ঘুঘুডাঙ্গায় অবস্থিত।

সাতপুকুর থেকে দূরত্ব –

দক্ষিণ দমদম ১ কিলোমিটার ; বরাহনগর ৩ কিলোমিটার ; বিধানগর ৫ কিলোমিটার।

সাতপুকুরের নিকটতম বাস স্টপেজ –

কাশিপুর, দমদম আরডি, চিরিয়া মোড়।