ইংল্যান্ডের ভয়ংকর কয়েকটি ভূতের বাড়ি


Table of Contents

ভূতের বাড়ি পশ্চিমা দেশগুলোর প্রায় সব বড় শহরগুলোতেই আছে। ঘোষ্ট ট্যুরের মাধ্যমে এসব ভূতের বাড়িতে পর্যটকদের ভ্রমণের ব্যবস্থাও আছে। এছাড়া টেলিভিশনেও দেখানো হয় এসব ভূতের বাড়ির ভয়ংকর কাহিনী। পর্যটন লেখক লিয়াকত হোসেন খোকন সে বিষয়েই আলোকপাত করেছেন।

রেনহ্যাম হল এবং ব্রাউন লেডি

ইংল্যান্ড আর আমেরিকাতেই ভূতের উপদ্রব বেশি। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ভূতের বাড়ির নাম হলো, ‘রেনহ্যাম হল’। জানা যায়, ইংল্যান্ডের নরফোমে অবস্থিত এই বাড়িতে একদা বসবাস করতেন ব্রাউন লেডি। এই বাড়িতে তিনি একাই থাকতেন। তিনি বাদামি কালারের পোশাক পরে থাকতেন বলে তাই তাঁর নাম হয়েছিল, ব্রাউন লেডি। তাঁর মৃত্যুর পরে এই বাড়িটি পরিত্যক্ত হয়। যে কারণে রেনহ্যাম হলে আশ্রয় নেয় ব্রাউন লেডির প্রেতাত্মা।

পরবর্তীতে এখানে গিয়ে বিশেষকরে গভীর রাতে কেউ কেউ দেখেছেন ব্রাউন লেডির প্রেতাত্মা। তিনি দেখা দিয়ে চোখের পলকে চলে গেছেন ‘হি -হি, হো –

হো’ হাসি দিয়ে।

১৯৩৬ খৃষ্টাব্দে ক্যাপ্টেন হিউবার্ট সি প্রোবান্দ এবং তাঁর অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্দ্রেশিরা রেনহ্যাম হলের এই ব্রাউন লেডির ছবিও তুলেছিলেন।

সেই ছবি ছাপা হয়েছিল ইংল্যান্ডের ‘কান্ট্রি লাইফ’ পত্রিকায়।

সেখানে উল্লেখ ছিল, তাঁরা না-কি দেখেছেন, একটা বায়বীয় বস্তু, যেটা ধীরে ধীরে একজন মহিলার আকৃতি নিতে শুরু করলো। তারপর সেই মূর্তিটা তাদের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করে। সেই সময়ই ছবিটা তুলে নেন ফটোগ্রাফার ইন্দ্র শিরা।

ভূতের বাড়ি

ওয়ারেন হেস্টিংসের প্রেতাত্মা

এ দিকে ইংরেজ সাহেব ওয়ারেন হেস্টিংসের প্রেতাত্মাও না-কি ঘুরে বেড়ায় হেস্টিংস হাউসে। অবশ্য তাঁকে চোখে দেখেনি কেউ, তবে দূর থেকে তাঁর অস্তিত্ব টের পাওয়া যেত ঘোড়ার গাড়ির আওয়াজে। আওয়াজ বোঝা যেতো, গাড়ি এসে থামছে হেস্টিংস হাউসের সামনে। তারপর গাড়ি থেকে নেমে কেউ একজন হেঁটে ঢুকে যাচ্ছেন হেস্টিংস হাউসের ভিতরে। তাঁর ভারী বুটের আওয়াজেই বোঝা যেত সেটা। উপরের লাইব্রেরিতে উঠে যেতেন, আবার কিছুক্ষণ পর নেমে এসে গাড়িতে চেপে চলে যেতেন। এই হেস্টিংস হাউস হল কলকাতায়।

এছাড়া কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি, হাইকোর্ট, সাউথ পার্ক স্ট্রিটের কবরস্থান, রেসকোর্স, রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন, ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামের মতো জায়গাতেও না-কি অতৃপ্ত আত্মাদের আনাগোনা রয়েছে।

আরও পড়ুন:
ট্রয় নগরী ধ্বংসের কারণ যা আজও বিস্ময়কর
চাদ: জেনে নিন সেখানে কখন মনুষ্য বসতি গড়ে ওঠে

তেমনি বাংলাদেশের সর্বত্র শ্মশানঘাটে, কবরস্থানে, পোড়ো বাড়ির আনাচে কানাচে অশরীরী আত্মারা ঘুরে বেড়ায় বহাল তবিয়তে।

বনজঙ্গল, বাঁশঝাড়, ধূ -ধূ ফাঁকা মাঠ – এ সব জায়গাতেও ভূত ঘুরে বেড়ায়।

আমেরিকার হোয়াইট হাউস নিয়ে আছে অনেক ভূতুরে কাহিনী।

আমেরিকার দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস এর স্ত্রী

আমেরিকার সবচেয়ে পুরনো ভূত হলেন আমেরিকারই দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস এর স্ত্রী। এখনও না-কি তাঁকে মাঝে মাঝে দেখা যায়। তবে হোয়াইট হাউসে ঘুরে বেড়ানো অশরীরী আত্মাদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলেন আব্রাহাম লিংকন। তাঁর মৃত্যুর পর আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্টদের মধ্যে অনেকেই তাঁকে দেখেছেন। কেউ কেউ তাঁর উপস্থিতিও অনুভব করেছেন সারা হোয়াইট হাউস জুড়ে। তাঁর হাসির আওয়াজ শোনা যেত, কেউ কেউ না-কি শুনেছেন তাঁর বেহালাবাদন। ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং নেদারল্যান্ডসের কুইন উইল হেলা মিনা না-কি তাঁকে দেখতে পেয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন।

মাইকেল জ্যাকসন বেভারলি হিলস’এ

মাইকেল জ্যাকসনকে ভূত হিসেবে নাকি অনেকে দেখেছেন তাঁর বেভারলি হিলস প্যালেসে। বহুজন দেখেছেন, সে এ ঘর থেকে ও ঘরে চলে যাচ্ছেন দ্রুতবেগে। তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং মাইকেল জ্যাকসন। মারা যাওয়ার দু’সপ্তাহ পর থেকেই মাঝে মাঝে দেখা গিয়েছে পপসম্রাট মাইকেল জ্যাকসনকে। তাঁর প্রতিবেশীরা আজও জানান, মাইকেল জ্যাকসনের বাড়ি থেকে সারারাত না-কি গানবাজনার আওয়াজও ভেসে আসে।

মৃত্যুর পর মানুষের শরীর থেকে বেরিয়ে আসে কুয়াশার মতো ধোঁয়াটে বস্তু, যেটার নাম একটোপ্লাজম বা ভাইব্রেশনাল এনার্জি। এই একটোপ্লাজমই না-কি আত্মা। এই আত্মাই ভূত হয়ে ঘুরে বেড়ায় বিভিন্ন নির্জন জায়গায়। আর ভূতের বাড়ি মানেই যে কোনো পোড়োবাড়ি মানুষজন নেই, বাড়ির ভিতরে বাদুড়ের বাসা, চারপাশে আরশোলা, টিকটিকি – এমনি স্থানে ভূতেরা ঘুরে বেড়ায়। এসব বাড়িতে ঢুকে কিম্বা রাতে পাহারার দায়িত্বে থাকা কেউ কেউ না-কি অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পান।