জন অরণ্যে প্রথম বসন্ত ও রাজকাহিনীর লিলি চক্রবর্তী


 লিলি চক্রবর্তী ঢাকার বিক্রমপুরের মেয়ে। শৈশব কেটেছে এখানেই। একসময় পরিবারের সাথে পাঁড়ি জমালেন কলকাতায়। সেখানে যোগ দিলেন অভিনয়ে। পেয়েছেন নাম, যশ, খ্যাতি সবই। গুণী অভিনেত্রী লিলি চক্রবর্তীর জন্মদিনে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা।

ফুলের নামে  নামটি তাঁর ………. ………….আমার পূর্ব -বাংলা, অনেক রাত্রে গাছের পাতার, বৃষ্টির শব্দের মতো কখনও মৃদঙ্গ,  হঠাৎ কখনও বেহালা -,একসময় বাঁশির সুর, যখন রাত্রে একাকী ঘুম ভাঙ্গে…………  ”

তখন মনে হয় ফুলেরা এই বুঝি ফুটে উঠবে……। ফুটে উঠবার ক্ষণ বুঝি এখনই……..!!

প্রভাতে ফুল হাতে নিয়ে সুবাস নেয়া তা তো চিরকালের অভ্যেস, শুনেছি – সেই মেয়েটি শৈশবে

ভালোবাসতেন ফুল……..

ওঁর মায়ের প্রিয় ফুল ছিল ” লিলি ফুল “।

লাল রংয়ের এ ফুলটি অন্যত্র অন্য নামে পরিচিত বলে শুনেছি।   জন্মের পরে মা ও বাবা মেয়েটির নাম রাখলো ” লিলি “।

জন অরণ্যে প্রথম বসন্ত ও রাজকাহিনীর লিলি চক্রবর্তী

লিলি চক্রবর্তীর জন্ম তারিখ ৮ ই আগষ্ট, ১৯৪১ ।

জন্ম তাঁর আমার পূর্ব বাংলার ঢাকায়, সেই ঢাকা এখন বাঙলাদেশের রাজধানী।

শৈশব কেটেছে মেয়েটির ঢাকায়……….

একদা তিনি ঢাকা ছেড়ে চলেও গেলেন,

যিনি জনমের মতো জন্মস্থান ত্যাগ করে চলে যান তিনিই  বোঝেন সেই মর্মব্যথা,

বোঝেন সেই যাতনার কথা।

আর কেউ কি বুঝবে,

বুঝবেনা – বুঝবেনা………!!

শুনেছি, সেই মেয়েটির বয়স আজ উনাশি । কলকাতার চিত্র জগতে ➕ যোগ দিয়েছিলেন

ষোল বয়সকালে ” ভানু পেলো লটারি ” ছবিতে

সেই ১৯৫৮ সালে।

১৯৬৩ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত মেয়েটির অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি ছিল – দেয়া নেয়া, কেদার রাজা, বিপাশা,  মহাকবি কীর্তিবাস, প্রিয়া, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, প্রথম বসন্ত, জননী, ভানু গোয়েন্দা জহর এ্যাসিসট্যান্ট,  শেষ পর্ব,  জন অরণ্যে,  আলাপ,  দুই পুরুষ,  দেবদাস, মুখুজ্য পরিবার ,  ও কে?  বৌদি, বালুচরি, অদ্বিতীয়া, প্রিয়া, শুভ ও দেবতার গ্রাস,  দর্পচূর্ণ – ইত্যাদি।

 

১৯৮১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তাঁর অভিনীত  অসংখ্য ছবির মধ্যে কয়েকটি হলো – সোনার বাংলা, পিপাসা,  সমাপ্তি,  রাধারাণী,  মনময়ূরী,  দিদি আমার মা,  জীবন যুদ্ধ,  চোখের বালি, জনতার আদালত, বুকভরা ভালোবাসা,   তবু ভালোবাসি,  তিল থেকে তাল,  পিতৃভূমি,  বাবু মশাই,  অন্তর্বাস,  রাজকাহিনী,  খাদ, যোগাযোগ,  শেষ চিঠি,  কার্জনের কলম – প্রভৃতি।

আরও পড়ুন: সঞ্জীবনী সুধায় কঙ্কাবতীর ঘাট থেকে উত্তম কুমারের যাত্রা হল শুরু

” প্রিয়া ” নামে মালায়ালাম ভাষায় নির্মিত একটি ছবির নায়িকাও ছিলেন তিনি সেই ১৯৭০ সালে।

 

❀ ফুলের নামে নাম ” লিলি ” –

অগ্রদূত পরিচালিত ছবি ” বিপাশা”য় অভিনয় করেন উত্তম কুমারের সহশিল্পী হিসেবে। এছাড়া দেয়া নেয়া আর ভোলা ময়রা ছবি দু’টিতেও মহানায়কের সহশিল্পী ছিলেন তিনি।

মেয়েটি আজ একাশি বয়সে এসে  হয়তো ভাবছে, খুব করে ভাবছে জনমের তরে ফেলে যাওয়া পূর্ব বাংলার কথা…………. তখন কী তাঁর মনে পড়ে না কবিতার ঃ  ” হয়তো বিচলিত আনন্দ – সম্ভার

হয়তো বিনিঃশেষ সংশয়িত জীবন, বিক্ষোভের অপরিমিত অজস্রতা,  এবং সমস্ত শব্দের একাগ্রতায়, আমার পূর্ব – বাংলা………..”

কবিতার এই চরণগুলি?

কে জানে – কে জানে তাঁর মনেরই কথাটি………..!!

জন অরণ্যে প্রথম বসন্ত ও রাজকাহিনীর লিলি চক্রবর্তী

❀ ফুলের নামে নাম এই মেয়েটির বাবা ও মায়ের নাম যথাক্রমে – কেশবচন্দ্র চক্রবর্তী ও দীপ্তি চক্রবর্তী।

তবে এখন  লিলি ফুলের ” লিলি ” আর এর সঙ্গে চক্রবর্তী যোগ দিয়ে মেয়েটির নাম হয়েছিল – ” লিলি চক্রবর্তী।   ৮ ই আগস্ট তাঁর জন্মদিন…………  তাঁর জন্মস্থান  পূর্ব বাংলার ঢাকা হতে দিলাম একগুচ্ছ লিলি ফুল………..।।

প্রিয় অভিনেত্রীর সুস্থতা কামনা করি।।

লিলি চৌধুরীকে নিয়ে দেখুন একটি তথ্যচিত্র: এখানে