সাকিব আল হাসান: ক্ষুরধার ক্রিকেটীয় মস্তিষ্কই কী তাঁর সবচেয়ে বড় অস্ত্র?


সাকিব আল হাসান- বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা তো বটেই গোটা বিশ্বেরই অন্যতম সেরা একজন অলরাউন্ডার। একের পর এক রেকর্ড ভেঙেচুরে র‍্যাংকিং এ শীর্ষস্থানে রাজত্ব করাটাকে যিনি রীতিমতো ডালভাত বানিয়ে ফেলেছেন,তাঁর সাফল্যের পেছনে কি এমন রহস্য লুকিয়ে আছে? তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গাই বা কোনটি?

আমরা যদি ক্রিকেটবিশ্বের কিংবদন্তি ও সেরা ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ার বিশ্লেষণ করি,তবে একটি জিনিস পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারব। সেটি হল,তাদের অধিকাংশই প্রচন্ড পরিশ্রমী ও অনুশীলনে প্রচুর সময় দেন নিজেদের। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই তাঁরা নিজেদের করে তোলেন আরো নিখুঁত। মোদ্দাকথা,কঠোর পরিশ্রমই তাঁদের সাফল্যের মূলমন্ত্র। সাকিব আল হাসান কি তাঁদেরই একজন? তাঁর সাফল্যের মূলমন্ত্রও কি একই?

ঠিক এই জায়গাতেই সাকিব আল হাসান সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। শুনতে অবাক লাগলেও এটিই সত্যি যে,সাকিবের সাফল্যের মূলমন্ত্র কঠোর পরিশ্রম নয়। এমনিতে ক্রিকেটার সাকিবের আত্ননিবেদন ও পরিশ্রমের দিকে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগই নেই। তবে সাথে সাথে এটিও সত্য যে,বাংলাদেশের সবচেয়ে কঠোর পরিশ্রমী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান নন।

এমনকি বাংলাদেশের পরিশ্রমী ক্রিকেটারদের তালিকায় সাকিবের নাম হয়তবা ৩ অথবা ৪ নম্বরে থাকবে। ১ নম্বরে অবশ্যই থাকবেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু,কঠোর পরিশ্রমী না হওয়া সত্ত্বেও সাকিব আল হাসান কিভাবে হয়ে উঠলেন বিশ্বসেরা? তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গাটিই বা তাহলে কোনটি? উত্তর একটাই-” প্রচন্ড ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্ক!”

হ্যাঁ, এটিই সাকিবের সাফল্যের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। এটি অনেকটাই ঈশ্বর প্রদত্ত। এটির বিস্তারিত জানতে হলে ফিরে যেতে হবে সাকিবের ছোটবেলায়। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের আর আট দশটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মতই সাকিবকেও ছোটবেলায় পড়াশোনার জন্য কড়াকড়ির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। খেলার জন্য মানতে হয়েছে কঠিন কঠিন সব শর্ত। কাজেই পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে যতটুকু সময় পেতেন,সেটি যথেষ্ট ছিল না। ফলে অনুশীলনের সময়ও পাওয়া যেত খুব কম। কিন্তু,সেই অল্প সময়ের জন্যই খেলতে গিয়ে নাস্তানাবুদ করে ছাড়তেন সতীর্থ খেলোয়াড়দের।

সাকিব আল হাসান যখনই যেই কোচের অধীনে খেলেছেন,তাঁরা প্রত্যেকেই একটি কথা বলেছেন যে,সাকিব আল হাসানকে একটি বিষয় দ্বিতীয়বার বোঝাতে হয়নি। প্রথমবারেই সাকিব আয়ত্ব করে ফেলতে পারতেন বিষয়গুলো। দেখা যেত,অন্যান্য খেলোয়াড়দের যে বিষয়গুলো বারবার হাতে কলমে ধরে শেখানো লাগত,সাকিব খুব অল্প সময়েই সেগুলো একেবারে আয়ত্ব করে ফেলতে পারতেন। কারণ,বোঝানোর সময় সাকিব খুবই মনোযোগী থাকতেন ও বিষয়গুলোকে মস্তিস্কে সঙ্গে সঙ্গে গেঁথে ফেলতেন। ফলে অন্যান্য খেলোয়াড়দের তুলনায় সাকিব ছিলেন যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে।

বয়স যত বেড়েছে,তাঁর এই অসাধারণ ক্রিকেট মস্তিষ্কও আরো পরিণত হয়েছে। বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় দল,সবকটি পর্যায়ে সাকিব যার ছাপ রেখেছেন। সাকিবের আরেকটি বড় গুণ হল- তিনি কখনোই চাপে পড়েন না। ক্রিকেট একটি মনস্তাত্ত্বিক খেলা। অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারই শুধুমাত্র চাপ সানলাতে না পারার কারণে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন। চাপের মুখে পড়ে নিজেদের শক্তির জায়গাটিও সঠিকভাবে প্রদর্শন করতে পারেননি। বিশেষ করে বাংলাদেশ দলে “চাপ” যেন রীতিমতো জুজুর মত কাজ করে আমাদের ক্রিকেটারদের মধ্যে।

আপাতদৃষ্টিতে এটি খুব সহজ মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি সমন্বয় করে চলা মোটেও সহজ কাজ নয়। শুধুমাত্র মনস্তাত্ত্বিক চাপ সামলাতে না পেরে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারই হারিয়ে গেছে কালের অতলগহ্বরে। এখনও অনেক ক্রিকেটারই মাঝে মাঝে ক্রিকেট থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখে মানসিকভাবে বিশ্রামে থাকেন।

আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের সাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিশাল পার্থক্য থাকায় সেই চাপ যেন আরো দ্বিগুণ হয়ে জেঁকে বসে আমাদের ক্রিকেটারদের ওপর। এছাড়া দর্শকদের প্রত্যাশার প্রবল চাপ তো আছেই। তবে,সাকিব কখনোই এগুলোকে নিজের ওপর চড়ে বসতে দেননি। চাপের মুখে ভেঙে পড়েননি। বরঞ্চ প্রতিউত্তরে নিজেই চড়ে বসেছেন চাপের ওপর। জবাব দিয়েছেন চোখে চোখ রেখে।

বাংলাদেশের খেলাগুলো একটু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলেই এই বিষয়গুলো অতি সহজে বোঝা যাবে। দেখা যাবে যে,শুরুতেই উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষও সেটির পূর্ণ ফায়দা নিয়ে চাপ বাড়িয়ে দিয়ে আরো চড়ে বসেছে ব্যাটসম্যানদের ওপর। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাটসম্যানরা আরো খোলসে ঢুকে পড়েছে। ঠিক সে সময়টাতে সাকিব ব্যাটিংয়ে নেমে সম্পূর্ণ স্রোতের বিপরীতে গিয়ে শুরু করেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং। আপাতদৃষ্টিতে সেটি প্রচন্ড ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেও সেটিই সবচেয়ে বেশী কাজে দেয়। উল্টো চাপ গিয়ে স্থানান্তরিত হয় প্রতিপক্ষের ওপর। প্রতিপক্ষ বাধ্য হয় রক্ষণাত্নক পদ্ধতি অবলম্বন করতে।

 

সাকিব আল হাসান

 

এটি যে শুধু সাকিবকেই স্বস্তি দেয় তা নয়,বরঞ্চ বাকি ব্যাটসম্যানরাও স্বস্তি ও সাচ্ছন্দ্য ফিরে পায়। বোলিংয়েও ঠিক একই পদ্ধতি অবলম্বন করেন তিনি। ব্যাটসম্যানকে প্রায়ই নানারকম টোপ দেন তিনি,যাতে ব্যাটসম্যান তাঁর বলে আক্রমণ করে। আর ঠিক এই ফায়দাটিই নেন সাকিব। তাঁর পাতা ফাঁদে পা দিয়েই হয়তবা দু একটি আক্রমণাত্নক শট খেলে সেই লোভ থেকেই আচমকা উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন ব্যাটসম্যান। এভাবেই মস্তিষ্ক খাটিয়ে ব্যাটিং-বোলিংয়ে সাকিব চাপকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বরঞ্চ চাপ ছুঁড়ে দেন প্রতিপক্ষের ওপর। সবই মস্তিষ্কের খেলা!

এছাড়া সাকিব বিশ্বের নানা প্রান্তে এত এত পরিমাণে ফ্র‍্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলেছেন যে,তাঁর অভিজ্ঞতার ভান্ডার প্রচন্ড ভারী। স্বভাবতই বিশ্বের বাঘা বাঘা ক্রিকেটারদের শক্তি ও দূর্বলতাগুলো তাঁর নখদর্পনে। ফলে যখনই তাঁদের বিপক্ষে খেলতে নামেন,সাকিব খুব শক্ত পরিকল্পনা নিয়ে নামেন। কাকে কোন টোপ দিতে হবে,সেটি তাঁর ভালমতই জানা থাকে। আর অধিনায়ক হিসেবেও সাকিব অসাধারণ।

বাংলাদেশের সবচেয়ে সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা স্বয়ং একথা বলেন যে,ট্যাকটিকাল দিক বিবেচনায় অধিনায়ক সাকিবই সবচেয়ে সেরা। এর মূল কারণ হল,বিশ্বের নামজাদা সব অধিনায়কের সাথে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করা ও তাঁদের সফলতার পেছনের টোটকা জানা রয়েছে সাকিবের। ফলে,তাঁর কাছে অসংখ্য রকম পরিকল্পনা আগেই তৈরী থাকে,যেগুলো পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োগ করতে কোন সমস্যাই হয়না সাকিবের।

আরও পড়ুন: সাকিব আল হাসান যেসব রেকর্ড গড়লেন নতুন করে

স্বয়ং সাকিব আল হাসানও অকপটে স্বীকার করেন যে,তিনি অবশ্যই কঠোর পরিশ্রমী কোন ক্রিকেটার নন। তবে যেটুকু সময়ই তিনি অনুশীলন করেন,সেই সময়টাতে তাঁর মনোযোগ থাকে তুঙ্গে। ফলে,যেই বিষয় নিয়ে অন্য ক্রিকেটারদের ঘন্টার পর ঘন্টা লেগে যায়,সেটি ঘন্টাখানেকের মধ্যেই সাকিব আয়ত্ত্বে নিয়ে আসতে পারেন। তিনি “Work smart,not hard” নীতিতে বিশ্বাসী। আবার যখন তাঁর মনোযোগ থাকবে না,কিংবা মন সায় দেবে না,তখন হাজার চেষ্টা করেও সাকিব ভাল পারফর্ম করতে পারেন না।

তাই,মানসিকভাবে ফিট থাকা সাকিবের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মাঠ থেকে বাইরে বের হওয়া মাত্রই সাকিব মাথা থেকে ক্রিকেটটাকে সম্পূর্ণভাবে ঝেড়ে ফেলেন। সময় দেন নিজেকে,পরিবারকে। বাকি সময়টুকু নিজের মত করেই উপভোগ করেন। কেননা,মাঠে নানারকম প্রতিকূল পরিস্থিতে তাঁকে এতটা মস্তিষ্ক খাটাতে হয় ও মস্তিষ্কের এতটা পরিশ্রম হয় যে,মস্তিষ্কের বিশ্রাম অবধারিত হয়ে পড়ে। সাকিব সেই বিশ্রামটুকুও যথাসম্ভব নিশ্চিত করেন।

আপাতদৃষ্টিতে এটি খুব সহজ মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি সমন্বয় করে চলা মোটেও সহজ কাজ নয়। শুধুমাত্র মনস্তাত্ত্বিক চাপ সামলাতে না পেরে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারই হারিয়ে গেছে কালের অতগহ্বরে। এখনও অনেক ক্রিকেটারই মাঝে মাঝে ক্রিকেট থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখে মানসিকভাবে বিশ্রামে থাকেন।

তাইতো, মাঝেমধ্যেই খেলা থেকে সাকিবের ছুটি নেয়াটাকে অনেকেই বাঁকা চোখে দেখলেও,আরো সতেজ ও পূর্ণ উদ্যমে ক্রিকেটে মনোনিবেশ করার জন্য সেটি যে কতটা জরুরি, দূর্দান্ত পারফরম্যান্স এর মাধ্যমে সাকিব সেটি বারবারই প্রমাণ করেছেন।

বাংলাদেশের মত একটি দেশ,যেখানে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটি এখনও খুব একটা গুরুত্বের চোখে দেখা হয় না,মানসিকভাবে দৃঢ় শক্তিশালী হয়ে ওঠার জন্য তেমন কোন ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়ে ওঠেনি; সেখানে সাকিব আল হাসান নিজের ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে রীতিমতো বিশ্বসেরা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন-এটি তো বিস্ময়কর ব্যাপারই বটে!

 

সাকিব আল হাসানের বিশ্বকাপে মোট রান কত?

বিশ্বের অন্যতম সেরা আলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ওয়ানডে বিশ্বকাপে বর্ণিল রেকর্ডের অধিকারী। দীর্ঘ্যদিন থেকেই ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ে তিনি এক নাম্বার স্থানে আছেন। কখনো স্থানচ্যুত হলেও সেরা তিনেও আছেন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে।

ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিব এ পর্যন্ত ২৯ ম্যাচে ১১৪৬ রান করেছেন। গড় ৪৫.৮৪। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১২৪। ১০টি অর্ধশত রানের পাশাপাশি ২টি সেঞ্চুরীও আছে সাকিবের ঝুলিতে। ব্যাটহাতে ২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান সবচেয়ে বেশি ঔজ্জ্বল্য ছড়িয়েছেন।


সাকিব আল হাসানের রেকর্ড

তিন সংস্করনের ক্রিকেটেই সাকিব আল হাসানের ঝলমলে রেকর্ড রয়েছে। সাকিবের সেরা কয়েকটি রেকর্ডের মধ্যে অন্যতম হল:

এক মাঠে সবচেয়ে বেশি উইকেট: ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট ষ্টেডিয়াম সাকিবের জন্য পয়মন্ত। এই মাঠে একজন বোলার হিসাবে তিনি টেষ্ট, ওয়ানডে এবং টি-২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেট লাভ করেছেন। এটি একটি বিশ্বরেকর্ড।

সবচেয়ে বেশি বল করার রেকর্ড: টি-২০ ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান সর্বোচ্চ বল করার রেকর্ডের অধিকারী। তিনি এপর্যন্ত বল করেছেন ২৩৮৫টি।

ইনিংসে সর্বাধিকবার চার উইকেট শিকার: টি-২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি বার চার উইকেট শিকার করার রেকর্ডে সাকিব আল হাসান প্রথম স্থানে। তিনি সর্বোচ্চ ছয়বার ইনিংসে চার উইকেট শিকার করেছেন।

এক মাঠে সর্বোচ্চ রান: ব্যাটার হিসাবে সাকিব আল হাসান এক মাঠে সর্বোচ্চ রান করার বিশ্ব রেকর্ডে দ্বিতীয় স্থানে আছেন।

একদিনের ক্রিকেটে পঞ্চম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডে তৃতীয় স্থানে আছেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধ ২০১৭ সালে সাকিব আল হাসআন এই রেকর্ডের অংশীদার হন।



সাকিব আল হাসানের ওয়ানডে উইকেট

একদিনের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান বেশ সমৃদ্ধ ক্রিকেট রেকর্ডের অধিকারী। একমাত্র বাংলাদেশী হিসাবে তিনি বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার হিসাবে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সেরা তিনে আছেন। একদিনের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান তিনশ উইকেট লাভের দ্বারপ্রান্তে আছেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২২৪ ম্যাচের ২২১ ইনিংসে হাত ঘুরিয়ে তিনি লাভ করেছেন ২৯৪টি উইকেট।

সেরা বোলিং: ৫/২৯। ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৪ বার।

 

সাকিব আল হাসানের টি ২০ ক্যারিয়ার

টি-২০ ক্রিকেটে সাকিবের ক্যারিয়ার বর্ণাঢ্য রেকর্ডময়। বিশ্বে বিভিন্ন টি২০ লীগে অংশগ্রহণ করে যে কয়জন ক্রিকেটার এধরনের খেলায় ফেরিওয়ালা অভিধা লাভ করেছেন, সাকিব তাদের মধ্যে অন্যতম। আইপিএল, সিপিএল, পিএসএলসহ বিশ্বের সেরা টি-২০ লীগের নিয়মিত মুখ সাকিব আল হাসান।

আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে সাকিব আল হাসান ১০৯ ম্যাচের ১০৭ ইনিংসে বল করে নিয়েছেন ১২৮ উইকেট। ম্যাচে সেরা বোলিং ৫/২০। আর ব্যাটিংয়ে এ পর্যন্ত ১০৯ ম্যাচের ১০৮ ইনিংসে করেছেন ২২৪৩ রান। সর্বোচ্চ ৮৪ রান। অ্যাভারেজ ২৩.১২। ষ্ট্রাইকরেট ১২১.৭৬।

 

সাকিব আল হাসানের মাসিক আয়

 

সাকিব আল হাসানের মাসিক আয়

সাকিব আল হাসান বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকধারী ক্রিকেটার। বিসিবির সাথে সর্বশেষ চুক্তিতে তিন সংস্করণের ক্রিকেটেই সাকিবকে সর্বোচ্চ বেতনে চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছে। তবে সেই বেতন কাঠামো উন্মুক্ত করা হয়নি। এখানে তার মাসিক বেতন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার বেশি।

এছাড়া আইপিএল, সিপিএল, পিএসএলসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেরা টি-২০ লীগগুলোতে বড় অংকের পারশ্রমিক লাভ করেন সাকিব আল হাসান। ঘরোয়া লীগ ও স্পন্সর থেকেও যথেষ্ট টাকা পান। এর বাইরে তার নিজস্ব ব্যবসাও আছে।

বিপিএলে সাকিব আল হাসান ২০২২ সালে পেয়েছেন ৭০ লাখ টাকা। কলকাতা নাইট রাইডার্স থেকে আইপিএলে খেলে পাচ্ছেন দেড় কোটি রুপি (দুই কোটি টাকার কাছাকাছি)। এর বাইরে সেরা খেলোয়াড় কিংবা অন্যান্য নৈপূণ্যের জন্য আলাদা পুরষ্কার তো আছেই। হিসাবটা তাহলে আপনিই মিলিয়ে নিন!

তবে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, স্বীকৃত ও প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সাকিব আল হাসান কমপক্ষে চারশ কোটি টাকার মালিক।