যে প্রক্রিয়ায় চলবে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান


শরতের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রত্যাবর্তন করবেন উচ্চশিক্ষার্থীরা যারা ভবিষ্যতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মূল্যবান অবদান রাখবেন। এ প্রেক্ষিতে করোনা মহামারীর সময়ে যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া দরকার সেসব নিয়ে আলোকপাত করেছেন দেবী শ্রীধর।

করোনার প্রাদূর্ভাব কিছুটা কমলেও এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়াটা অনেকটাই ঝুকিপূর্ণ। যেহেতু প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী স্কটল্যান্ডের বাইরে থেকে পড়তে আসবেন এবং কম বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য করোনার পরীক্ষা,বাছাই এবং পৃথকীকরন করাটা কঠিন কাজ।

শিক্ষার্থীদের স্কটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে স্বাগত ও উৎসাহ জানানোর প্রক্রিয়ায় তাদের সুরক্ষা দেয়ার পদক্ষেপগুলো জানানো দরকার। এবিষয়ে এখানে কিছুটা আলোকপাত করছি:

প্রথমত: স্কটল্যান্ডের চেয়েও বেশি আক্রান্ত এলাকা থেকে যারা আসবেন তাদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিমানবন্দর কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে করতে হবে। যারা পরীক্ষায় পজিটিভ প্রমাণ হবেন তাদের পাঁচদিন পর আবার পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হাঁটা দূরত্বে করোনা পরীক্ষাগার স্থাপন করা উচিত।

 

অসুস্থতাবোধ করলে শিক্ষার্থীদের বারবার করোনা পরীক্ষার জন্য তাগাদা দিতে হবে এবং স্কটল্যান্ড সরকারের কভিড-১৯ নির্দেশনা মেনে লোকারণ্যে যাওয়া বন্ধ করতে হবে। 

দ্বিতীয়ত: বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাত্র আচরনবিধিতে করোনার সময় কোয়ারেন্টাইনে থাকা এবং ১৪ দিন শিক্ষার্থীদের সমর্থন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে স্কটল্যান্ডের নিরাপদ দেশ সমূহের তালিকায় না থাকা দেশ থেকে কেউ এলে তার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বা পৃথকীকরণ তদারকি করা, এর সাথে অন্যকেউ আক্রান্ত হলে কিংবা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকলে স্ববিচ্ছিন্ন থাকতে স্থানীয় করোনা আক্রান্তদের শনাক্তকারীদের পর্যবেক্ষণে রাখা।

তৃতীয়ত: সব জায়গায় বাধ্যতামূলক মুখ ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করা যেমন- শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদান, কর্মক্ষেত্র এবং অভ্যর্থনা এলাকাসহ গণপরিবহন এবং দোকানগুলোতেও মাস্ক পরিধান করার ব্যবস্থা রাখা।

চতুর্থত: বক্তৃতা কক্ষ এবং শ্রেণীকক্ষে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখা, হাত জীবাণুমুক্তকরন সুবিধা এবং উপযুক্তভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার দিকনির্দেশনা প্রদান করা। বায়ু চলাচল বিশেষ গুরুত্বপূর্ন কারন চলমান সার্স কিংবা কভ-২ ক্ষুদ্রকণিকা তৈরি করে যার নাম এরোসল যা অন্য কেউ শ্বাস নিলে সংক্রমণ করতে পারে।

আরও পড়ুন:অনলাইনে যেসব সাইটে পাবেন বাংলা বই, পত্রিকা ও ম্যাগাজিন

পঞ্চমত: বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বাস্থ্যবিভাগের সাথে ভূমিকা রেখে শিক্ষার্থীদের করোনা সনাক্তকরণ এবং প্রতিরক্ষা’র সাথে সামনাসামনি শিক্ষাদানের পরিবর্তে অনলাইনে পাঠদানে উৎসাহ প্রদান করা।

করোনার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া এবং তার প্রতিরোধ সম্পর্কে যতবেশি প্রস্তূতি নেয়া সম্ভব হবে আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ততটাই নিরাপদ থাকবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যনিরাপত্তায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখার মাধ্যমে স্কটিশ সরকারের প্রধান লক্ষ্য করোনার প্রাদূর্ভাব কমিয়ে আনায় সাহায্য করা, গণ-সংক্রমন দূর করা এবং সতর্কভাবে আবার চালু করা।  তবে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে সতর্ক প্রক্রিয়ায় যেতে হবে যাতে স্কটল্যান্ডে নিম্নমুখী আক্রান্তের হার অব্যাহত থাকে।

অধ্যাপক দেবী শ্রীধর : এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বর্তমান কোভিড-১৯ ইস্যুতে স্কটিশ সরকারের পরামর্শক।

(ইংরেজী থেকে ভাবানুবাদ।)


Leave a Comment