সৌদি আরবের ভিসা চেক করার নিয়ম ও দাম কত

সৌদি আরবের ভিসা চেক করা আজকাল খুবই সহজ এবং নিরাপদ প্রক্রিয়া, যা আপনার ভ্রমণ বা কর্মসংস্থানের পরিকল্পনাকে আরও নিশ্চিত করে তোলে। সৌদি আরব, যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মস্থান এবং এশিয়ার সবচেয়ে বড় আরব দেশ হিসেবে পরিচিত, একটি দ্রুত উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। এখানে প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশি জীবিকার সন্ধানে বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে যান। ভিসা স্ট্যাটাস যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে প্রতারণার ঝুঁকি কমে এবং যাত্রা নির্বিঘ্ন হয়। এই নির্দেশিকায় আমরা ধাপে ধাপে জানাব কীভাবে অনলাইন বা অফলাইনে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন, সাথে খরচ, সময় এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বিস্তারিত তথ্য। পড়তে থাকুন, কারণ শেষে থাকছে সাধারণ প্রশ্নোত্তর যা আপনার সব সন্দেহ দূর করবে।

সৌদি আরবের ভিসা চেক করার নিয়ম

ভিসা যাচাইয়ের পদ্ধতি মূলত ভিসার ধরনের ওপর নির্ভর করে, তবে সাধারণ নিয়ম সবার জন্য প্রযোজ্য। অফলাইনে বাংলাদেশ বা সৌদি সরকার অনুমোদিত এজেন্সি অফিসে গিয়ে সরাসরি চেক করা যায়। তবে অনলাইন পদ্ধতি সবচেয়ে সুবিধাজনক এবং দ্রুত। প্রথমে একটি ডিভাইসে ইন্টারনেট চালু করে সৌদি ইমিগ্রেশনের অফিসিয়াল পোর্টালে যান। সেখানে ফর্মে পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয়তা এবং ভিসা বিভাগের তথ্য দিয়ে সার্চ করুন। ফলাফল তাৎক্ষণিক দেখাবে ভিসা অনুমোদিত, প্রক্রিয়াধীন বা প্রত্যাখ্যাত কিনা। এতে সময় বাঁচে এবং ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো যায়।

সৌদি আরবের ভিসা চেক করতে গেলে সতর্কতা অবলম্বন করুন, যাতে কোনো তথ্য ভুল না হয়।

পাসপোর্ট দিয়ে সৌদি ভিসা চেক

পাসপোর্ট নম্বরই ভিসা যাচাইয়ের মূল চাবিকাঠি। অফিসিয়াল সাইট https://visa.mofa.gov.sa/-এ প্রবেশ করুন। যদি পেজ আরবিতে দেখায়, তাহলে উপরের বাম কোণে ‘E’ আইকনে ক্লিক করে ইংরেজি ভাষা নির্বাচন করুন। তারপর পাসপোর্ট নম্বরের ঘরে সঠিক নম্বর লিখুন। জাতীয়তা হিসেবে ‘Bangladesh’ সিলেক্ট করুন। ভিসা টাইপে আপনার আবেদিত ক্যাটাগরি বেছে নিন, যেমন ওয়ার্ক বা টুরিস্ট। ইস্যু কর্তৃপক্ষের জায়গায় যাত্রা শুরুর শহর দিন, উদাহরণস্বরূপ ঢাকা থেকে হলে ‘Dhaka’। ক্যাপচা কোড টাইপ করে সার্চ করুন। স্ক্রিনে ভিসার বর্তমান অবস্থা, মেয়াদ এবং অন্যান্য বিবরণ দেখাবে। এই পদ্ধতি নিরাপদ এবং বিনামূল্যে।

সৌদি ভিসার দাম কত

ভিসা খরচ ভিন্ন ভিন্ন ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে, যেমন এজেন্সি বা সরকারি চ্যানেল। সাধারণত প্রাইভেট এজেন্সির মাধ্যমে ৫ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা লাগতে পারে। সরকারি পথে এটি ৪ লাখ থেকে ৫ লাখের মধ্যে থাকে। তবে ক্যাটাগরি অনুসারে পরিবর্তন হয়: টুরিস্ট ভিসা ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ, মেডিকেল ভিসা প্রায় ১ লাখ, আর ওয়ার্ক ভিসা ৫ লাখ থেকে ৫.৫ লাখ টাকা। এতে মেডিকেল টেস্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং অন্যান্য ফি অন্তর্ভুক্ত। সঠিক খরচের জন্য অনুমোদিত এজেন্সি বা দূতাবাসে যোগাযোগ করুন।

সৌদি আরবের ভিসা চেক করে খরচের সাথে মিলিয়ে নিলে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় এড়ানো যায়।

সৌদি ভিসা প্রসেসিং কত দিন লাগে

প্রসেসিং সময় সাধারণত ৫ থেকে ৭ দিন, তবে সর্বোচ্চ ১৫ দিন পর্যন্ত যেতে পারে। জরুরি ক্ষেত্রে বিশেষ আবেদন করে ২-৩ দিনে সম্পন্ন করা সম্ভব। কাগজপত্রে কোনো ত্রুটি থাকলে ২৫ থেকে ৪০ দিন লাগতে পারে। সময় কমাতে সব ডকুমেন্ট আগে থেকে প্রস্তুত রাখুন এবং অনলাইন ট্র্যাকিং ব্যবহার করুন। এতে আপনার পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হয় না।

সৌদি যেতে কি কি লাগে

সৌদি ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ভিসা টাইপ অনুসারে ভিন্ন। সাধারণত বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ এবং খালি পৃষ্ঠা সহ), রঙিন ছবি, এয়ার টিকেট, হোটেল বুকিং (যদি দরকার হয়) এবং অনুমোদিত ভিসা লাগে। আবেদনের সময় অতিরিক্ত: এনআইডি বা জন্ম সনদ কপি, মেডিকেল রিপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ব্যাংক স্টেটমেন্ট (৩ মাসের), শিক্ষা বা দক্ষতার প্রমাণ, এবং নির্দিষ্ট লাইসেন্স (যেমন ড্রাইভিং ভিসার জন্য)। সবকিছু সঠিক রাখলে প্রক্রিয়া মসৃণ হয়।

শেষ কথা

সৌদি আরবের ভিসা চেক করার নিয়ম অনুসরণ করে প্রতারক এজেন্টদের হাত থেকে বাঁচুন। সর্বদা অফিসিয়াল চ্যানেল ব্যবহার করুন, যাতে আপনার স্বপ্নের যাত্রা নিরাপদ হয়। এই তথ্যগুলো আপনার সাহায্য করবে বলে আশা করি। নিরাপদ ভ্রমণ কামনা করছি!

FAQs (Frequently Asked Questions)

সৌদি ভিসা কত প্রকার? সৌদিতে মূলত ৫ ধরনের ভিসা পাওয়া যায়: হজ ও ওমরাহ, কর্মসংস্থান, পর্যটন, ব্যবসা এবং আবাসিক।

সৌদি ভিসার মেয়াদ কতদিন থাকে? ক্যাটাগরি ভেদে ৩০ দিন থেকে ২ বছর পর্যন্ত, সাধারণত ওয়ার্ক ভিসা দীর্ঘমেয়াদি।

সৌদি ভিসা কি বন্ধ? কোভিডের সময় বন্ধ থাকলেও ২০২১ থেকে সম্পূর্ণ চালু আছে।

সৌদি ভিসা চেক করার লিংক অফিসিয়াল: https://visa.mofa.gov.sa/

সৌদি যেতে কত বয়স লাগে? ওয়ার্ক ভিসার জন্য সাধারণত কমপক্ষে ২১ বছর।