অলরাউন্ডারদের আধিপত্যে সিরিজ ইংল্যান্ডের!


তিন ম্যাচের সিরিজে প্রথমটিতে হেরে শুরুতেই ব্যাকফুটে। এরপর প্রত্যাশিতভাবেই ঘুরে দাঁড়ানো ইংল্যান্ডের। পরপর দুটি টেষ্ট জয়ে সিরিজ জিতে নিল ফেভারিট হিসাবেই।

তৃতীয় টেষ্টের তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুভাস পাচ্ছিল ইংল্যান্ড। মাঝখানে বৃষ্টি এসে ভাসিয়ে নিয়ে গেল চতুর্থ দিন। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের সুযোগ ছিল সারাদিন ব্যাট করে ম্যাচটি ড্র করা। তাতে সিরিজ অমীমাংসিত থাকত। কিন্তু ৫০০ উইকেটের হাতছানিকে আলিঙ্গন করে ইংল্যান্ডের ষ্টুয়ার্ট ব্রড সেটাকে পাত্তাই দিলেন না। সাথে যোগ দিলেন আরেক অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস। দুজনে মিলে ভাগাভাগি করে নিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৯ উইকেট। রান আউটের খাড়ায় প্রতিপক্ষের অলরাউন্ডার রোষ্টন চেজ আটকা না পড়লে এই দুই পেস বোলিং অলরাউন্ডার হয়তো ১০ উইকেটই পেয়ে যেতেন।

 

প্রথম ইনিংসে অল্ডট্রাফোর্ডের দর্শকবিহীন সবুজ গালিচায় বাউন্সি উইকেট আর বাতাসের আনুকুল্য কাজে লাগিয়ে দুই দলের পেইস বোলাররাই ছিলেন কার্যকর। তবে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের গতি দানবদের মোকাবেলা করে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে স্কোরকার্ড মোটামুটি স্ফীত রাখতে পেরেছিলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। তিনটি হাফসেঞ্চুরী আর অলিভার পোপের একটি প্রায় সেঞ্চুরীর (৯১) সম্মিলনে ইংল্যান্ডের ৩৬৯ রান লড়াই করারই স্কোর।

 

অলরাউন্ডারদের আধিপত্যে শেষপর্যন্ত সিরিজ ইংল্যান্ডের!

 

সে তুলনায় ওয়েষ্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা কার্যকর প্রতিরোধ কিংবা আত্মরক্ষা করতে ব্যর্থই হয়েছেন। ১৯৭ রানের দলীয় সংগ্রহে ৭ নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার হাফ সেঞ্চুরীর কাছাকাছি (৪৬) গিয়েছিলেন। বাকি ব্যাটসম্যানরা ইংল্যান্ডের কুশলী বোলারদের কারুকাজে কুপোকাত হন। প্রথম ইনিংস শেষে প্রায় ৩দিন হাতে রেখে ১৭২ রানের লিড- ইংল্যান্ডের বাকি পরিকল্পনা মাঠে অনুবাদের জন্য হাতে যথেষ্টই সময়। হলও তাই!

আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট জয়ের পেছনে টার্নিং পয়েন্টসমূহ

ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিপক্ষের পেসাররা যাতে আতংক না ছড়াতে পারেন সে কৌশলেই এগিয়েছে দলের পরিকল্পনা। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শুরু করলেন চিরায়ত নিয়মে উইকেট ধরে রেখে এগোনো। প্রথম ইনিংসের বড় লিড সত্বেও এরকম কচ্চপ গতির ব্যাটিং পছন্দ করেন নি ধারাভাষ্য দিতে আসা সাবেকরাও। তবে ৯০ এর ঘরে গিয়ে ররি বার্নস আউট হলে অধিনায়ক জো রুট আক্রমনাত্মক ব্যাটিং করে ৫৬ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস ঘোষনা করেন।

 

অলরাউন্ডারদের আধিপত্যে শেষপর্যন্ত সিরিজ ইংল্যান্ডের!

 

তৃতীয় দিন বিকেলে ৩৯৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপের কাছে নতি স্বীকারে বাধ্য হয় উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ৬ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে বিশাল টার্গেট চেজ করতে যে শুরু দরকার তার নাগাল পায়নি তারা। চতুর্থদিন বৃষ্টিতে ভেসে না গেলে হয়তো চারদিনেই শেষ হয়ে যেত ইংল্যান্ডের অপেক্ষা!

অলরাউন্ডারদের আধিপত্য ছিল সিরিজ জুড়েই। ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম দুটি টেষ্টে দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়াশৈলি দেখিয়েছেন বর্তমান সময়ের সেরা অলরাউন্ডার বেন ষ্টোক। বিগত বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের ন্যায় ধারাবাহিকভাবে উজ্জল তিনি। দ্বিতীয় টেষ্টে প্রায় একাই জিতিয়েছেন ইংল্যান্ডকে।

অলরাউন্ডারদের আধিপত্য ছিল সিরিজ জুড়েই। ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম দুটি টেষ্টে দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়াশৈলি দেখিয়েছেন বর্তমান সময়ের সেরা অলরাউন্ডার বেন ষ্টোক। বিগত বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের ন্যায় ধারাবাহিকভাবে উজ্জল তিনি। দ্বিতীয় টেষ্টে প্রায় একাই জিতিয়েছেন ইংল্যান্ডকে। ফিরিয়ে এনেছেন সিরিজে। আর প্রথম টেষ্টে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার রোষ্টন চেজ ব্যাটে বলে দূর্দমনীয় নৈপুন্য প্রদর্শন করে দলকে জেতান। ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলেছেন তিন ম্যাচেই।

 

অলরাউন্ডারদের আধিপত্যে শেষপর্যন্ত সিরিজ ইংল্যান্ডের!

 

সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে অনেকগুলো প্রাপ্তির দেখা পেয়েছেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার ষ্টুয়ার্ট ব্রড। টেষ্টে মাত্র ৭ম বোলার হিসাবে ৫০০ উইকেটের অভিজাত ক্লাবে পা রেখেছেন এই ম্যাচেই। দুই ইনিংস মিলিয়ে ম্যাচে একজন বোলারের পরম আরাধ্য ১০ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং লাইনআপে ১০ নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে দ্রুতলয়ের একটি  ঝকঝকে হাফ সেঞ্চুরী। ম্যান অব দ্য ম্যাচের জন্য জুরী বোর্ডের সদস্যরা দুইবার চিন্তা করেছেন একথা কেউ বিশ্বাস করবে না। ক্রিকেট দেবতা দুই হাত ভরে দিয়েছেন ষ্টুয়ার্ট ব্রডকে এই ম্যাচে!