রাওয়ালপিন্ডি যে কারণে বিখ্যাত


রাওয়ালপিন্ডি শহরটি অনেক শিল্প ও কলকারখানার আবাসস্থল। ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরটি রাওয়ালপিন্ডিতে।

রাওয়ালপিন্ডিতে উর্দু এমন একটি ভাষা যা ওখানকার সবাই বোঝে। এটি ওখানকার কথ্য ভাষা। তবে রাওয়ালপিন্ডিতে বেশির ভাগ মানুষ, বিশেষ করে শহরে বসবাসকারীরা পাঞ্জাবি ভাষায় কথা বলে। তাই উর্দু হল সেনানিবাসে বসবাসকারী লোকেদের কথ্য ভাষা।

রাওয়ালপিন্ডি বিখ্যাত হওয়ার কারণ হলো এটি পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক সদর দপ্তর এবং ১৯৬০ এর দশকে ইসলামাবাদ নির্মিত হওয়ার সময় এটি পাকিস্তানের রাজধানী হিসেবেও কাজ করেছিল।

রাওয়ালপিন্ডিতে বসবাসকারী শিক্ষিত অভিজাতরাও ইংরেজি বোঝেন এবং ইংরেজিতে কথা বলেন।

রাওয়ালপিন্ডির সংলগ্নে ইসলামাবাদ অবস্থিত। শহরগুলির মধ্যে শক্তিশালী সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংযোগের কারণে দু’টি যৌথভাবে যমজ শহর হিসাবে পরিচিত।

রাওয়ালপিন্ডি ২১ লক্ষ মানুষের একটি শহ। এটি পশ্চিম পাঞ্জাব রাজ্যের মধ্যে অবস্থিত একটি কোলাহলপূর্ণ শহর। এ শহরটির একটি শক্তিশালী ঔপনিবেশিক প্রভাব রয়েছে – এই শহরে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের সাথে একটি বড় সামরিক সেনানিবাস রয়েছে।

এক সময় রাওয়ালদের গ্রাম ছিল এই অঞ্চলটি। রাওয়ালদের দ্বারা অধ্যুষিত একটি পুরনো গ্রামের জায়গা দখল করে, একদল যোগী তপস্যাদের স্থান ছিল। যোগী আর রাওয়ালদের উচ্ছেদ করে রাওয়ালপিন্ডি শহরটি গড়ে ওঠে।

এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থলের কিছু ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল। গাজীপুর নামে একটি অঞ্চলও ছিল রাওয়ালপিন্ডিতে। ভাট্টি উপজাতিদের রাজধানী ছিল এই গাজীপুরে – কেউ বা বলেন গজনিপুর।

রাওয়ালপিন্ডি জেলার শহর ও গ্রাম হল – রাওয়ালপিন্ডি, তক্ষশীলা, মুরি, গুজার খান, নাম্বাল, লালকুর্টি, মাতোরে, গুলিয়ানা, দৌলতলা।

ইসলামাবাদের নিকটবর্তী মালভূমির উপরস্থ শহর হলো রাওয়ালপিন্ডি। এটি পাকিস্তানের চতুর্থ বৃহত্তম শহর। এর প্রথম দিকের শহরগুলি হলো – করাচি, লাহোর এবং ফয়সালাবাদ।

স্থানীয়ভাবে রাওয়ালপিন্ডি শুধু পিণ্ডি নামে পরিচিত। এই অঞ্চলেই গড়ে ওঠে সোয়ানিয়ান সংস্কৃতির অধিবাসীদের বাস।

রাওয়ালপিন্ডি জেলা হলেও এটি বিভাগীয় শহর।

সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এ শহরটির উচ্চতা ৫০৮ মিটার বা ১,৬৬৭ ফুট।

রাওয়ালপিন্ডি শহরে একটি সুপ্রাচীন কৃষ্ণ মন্দির রয়েছে। এছাড়া মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল হওয়ায় অনেক মসজিদ রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য’র প্রতিবেদন অনুযায়ী রাওয়ালপিন্ডি শহরটি বিশ্বের ১৪তম সবচেয়ে বায়ু দূষিত শহর হিসেবে গণ্য হয়েছে।

প্রধান খাদ্য হচ্ছে গম, বার্লি, ভুট্টা, মাছ এবং ডাল।

সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতার এ জেলার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব।

এছাড়া রাওয়ালপিন্ডি জেলায় বিখ্যাত চিত্রতারকা স্বর্ণলতার জন্মস্থান।

দর্শনীয় স্থান হল – রাওয়াত ফোর্ট, লোহি বেহের ওয়াইল্ড লাইফ পার্ক, মিরাকেল গার্ডেন, টাকি প্লাজা, ডিসকাভারি রাইড, বাহারিয়া গ্লো পার্ক, জাঙ্গল ওয়ার্ল্ড, ওয়ান্ডারল্যান্ড, পেপসি জাঙ্গল কিংডম, কাচনার পার্ক, রুমি পার্ক, স্টেচু অফ লিবার্টি, আর্মি মিউজিয়াম, লিয়াকত বাগ, জয়ল্যান্ড, জিন্নাহ পার্ক।

আরও পড়ুন: জিন্নাহ জৌনপুর ফেলে এসেছিলেন কেন?