বর্তমানে এক বেহাল দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে একের পর টানা হারের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে জাতীয় দল। কোনভাবেই কোন টোটকাতেই বদলানো যাচ্ছে না দৃশ্যপট। ফলে প্রচন্ড হতাশায় ভুগছেন দেশের ক্রীড়াপ্রেমীরাও। এ যেন এক দমবন্ধ করা পরিস্থিতি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই দুরাবস্থায় ত্রাণ কর্তা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে আমাদের অনূর্ধ্ব–১৯ জাতীয় ক্রিকেট দল তথা যুবা টাইগাররা। যুবা টাইগারদের হাত ধরেই আবার ঘুরে দাঁড়াক বাংলাদেশের ক্রিকেট ।
ভুলে গেলে চলবেনা,সর্বশেষ যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলটির নাম কিন্তু ‘বাংলাদেশ’! যারা বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখেন,তারা নিশ্চয়ই জানেন যে,বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্সের গ্রাফ ওঠা-নামা করলেও যুব ক্রিকেট দল কিন্তু প্রতিটি বিশ্বকাপেই দূর্দান্ত পারফরম্যান্স করে। প্রতিটি খেলাতেই চোখধাঁধানো নিবেদন ও উদ্যমের দেখা মেলে ১৯ না পেরোনো যুবাদের মাঝে।
[web_stories title=”true” excerpt=”false” author=”false” date=”false” archive_link=”true” archive_link_label=”https://sagorpar.com/2021/12/09/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%9f/” circle_size=”150″ sharp_corners=”false” image_alignment=”left” number_of_columns=”1″ number_of_stories=”5″ order=”DESC” orderby=”post_title” view=”circles” /]
এবারের যুব বিশ্বকাপ খেলতে যাবে যে দলটি,সেটিতে রয়েছে দারুণ ভারসাম্য। গতবারের বিশ্বকাপজয়ী দলের ৩ ক্রিকেটার- রাকিবুল হাসান,তানজিম সাকিব ও প্রান্তিক নওরোজ নাবিলের সাথে যুক্ত হয়েছে দূর্দান্ত পারফর্ম করা আরো একঝাঁক নতুন ক্রিকেটার। দলের অধিনায়কত্ব তুলে দেয়া হয়েছে অভিজ্ঞ রাকিবুলের হাতেই। ফলে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেলে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ এক দল নিয়েই যুব বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে টাইগাররা।
আরও পড়ুন: সাকিব আল হাসান যেসব রেকর্ড গড়লেন নতুন করে
সবচেয়ে বড় আশা ও ভরসার জায়গাটি হল,যুব বিশ্বকাপের অন্যতম হট ফেভারিট ‘ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ক্রিকেট দল’ এর সঙ্গে সম্প্রতিই একটি টূর্ণামেন্ট খেলে সবকটি ম্যাচ জিতে (বৃষ্টিতে এক ম্যাচ পরিত্যক্ত) অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট দল। ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলটি ‘এ’ ও ‘বি’- নামক দুটি দলে ভাগ হয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে নেমেছিল। তবু একটি ম্যাচেও জিততে পারেনি তারা। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে বাংলাদেশের জয়গুলো ছিল যথাক্রমে ২ উইকেটে,১১৩ রানে ও ৬ রানে। আর ফাইনালে ভারত ‘বি’ দলকে ১৮১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে যুবা টাইগাররা। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ছিল অনবদ্য। টূর্ণামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক প্রান্তিক নওরোজ নাবিলের ৪ ম্যাচে ২২৬ রান যেন সেটিই প্রমাণ করে।
অথচ এর আগের সিরিজেই শ্রীলঙ্কা যুব দলের সাথে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের সবকটিতে হেরে হোয়াইটওয়াশ হয়ে বেশ শঙ্কার জন্ম দিয়েছিল বাংলাদেশের যুবারা। তবে,এই সিরিজে খেলেনি দলের নিয়মিত কয়েকজন ক্রিকেটার। ফলে,চারিদিক থেকে নানা সমালোচনা উঁকি-ঝুঁকি দিলেও যুবারা ছিল আত্নবিশ্বাসী। যার ফলাফল আমরা তো এখন দেখতেই পাচ্ছি।ভারতের ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেনস স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ যুব দলের হাতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে দেন খোদ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি। সুতরাং,এই টূর্ণামেন্ট জয় বাংলাদেশী যুবাদের মানসিকভাবে কতটা যে আত্নবিশ্বাসী করে তুলেছে,তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
যুবা টাইগাররা আমাদের কখনই হতাশ করেনি। অনবদ্য পরিশ্রম,উদ্যম,আত্নবিশ্বাস ও পারফরম্যান্স দিয়ে তারা সবসময়ই লড়াই করে। এটিই তাদেরকে অন্য সকলের চেয়ে আলাদা করে তোলে। খেলায় হারজিত থাকবেই। তবে,এই যুব টাইগাররা হারার আগে হারতে জানে না। তারা শুধু জানে,দাঁতে দাঁত চেপে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যাওয়া। চাতক পাখির মত একটুখানি সাফল্যের আশায় থাকা কোটি কোটি সমর্থককে আবারও উল্লাসে মাতিয়ে তুলুক ওরা। শুভকামনা রইল বাংলাদেশের ক্রিকেট যুব টাইগারদের জন্য।