রেস্তোরাঁয় এক কাপ চা কিংবা কফি নিয়ে তিন ঘন্টা সময় কাটালেও কেউ উঠতে বলে না যে দেশে তার অবস্থান উত্তর আমেরিকার সর্বদক্ষিণে। পানামকে নিয়ে লিখেছেন দুই বাংলার অন্যতম সেরা ভ্রমণ লেখক লিয়াকত হোসেন খোকন।
Table of Contents
- পানামা উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণাংশের একটি রাষ্ট্র। এ দেশটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সংযোগস্থলে অবস্থিত। এক সময় পানামা দেশটি কলম্বিয়ার অধীনে ছিল।
- পানামাতে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শুষ্ককাল এবং মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকাল থাকে।
- পানামা দেশটির আয়তন মোট ৭৫,৪১৭ বর্গকিলোমিটার।
পানামা উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণাংশের একটি রাষ্ট্র। এ দেশটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সংযোগস্থলে অবস্থিত। এক সময় পানামা দেশটি কলম্বিয়ার অধীনে ছিল।
পানামার রাজধানী বসেছে পানামা সিটিতে। এটি পানামার বৃহত্তম শহর। পানামার কেন্দ্রীয় উপকূলভাগে পানামা খালের যে প্রান্ত প্রশান্ত মহাসাগরের সাথে সংযুক্ত সেখানেই পানামা সিটির অবস্থান। আমেরিকা মহাদেশের সবচাইতে সরু অংশে অবস্থিত হওয়ায় এই শহরের নিকট দিয়েই আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে যাতায়াত মালামাল পরিবহনের কাজ চলে। ষোড়শ শতাব্দীতে এই শহরের পত্তনের পর থেকেই এই প্রক্রিয়া চলে আসছে। পানামার রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য এবং শিল্পোৎপাদনের কেন্দ্রও এই শহর। এখানের আবহাওয়া সামুদ্রিক ক্রান্তীয় ধরনের। পানামা শহরটির প্রতিষ্ঠাকাল ১৫১৯ খৃষ্টাব্দ। এ শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন পেদ্র আদিয়াস ড্য এ্যা়ভিলা। শহরটির আয়তন মোট ২৭৫ বর্গকিলোমিটার। তবে মহানগরীর আয়তন ২,৫৬০.৮ বর্গকিমি।
পানামাতে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শুষ্ককাল এবং মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকাল থাকে।
পানামাতে আটলান্টিক মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের সংযোগকারী পানামা খাল অবস্থিত। পানামা দেশের সরকারি ভাষা স্পেনীয়।
এ দেশে কলম্বিয়া কর্তৃক শাসনের আগে স্পেনীয়রা পানামা শাসন করেছিল। স্পেন থেকে পানামা মুক্ত হয় ১৮২১ খৃষ্টাব্দের ২৮ নভেম্বর। আবার কলম্বিয়া থেকে মুক্ত হয় ১৯০৩ খৃষ্টাব্দের ৩ নভেম্বর।
পানামা দেশটির আয়তন মোট ৭৫,৪১৭ বর্গকিলোমিটার।
দেশটি মধ্য আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অত্যন্ত উচ্চ। দেশটি পৃথিবীর ধনী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি রাষ্ট্র।
পানামার দর্শনীয় স্থান হলো – স্যান ব্লাস আইল্যান্ডস, পুরাতন পানামা অঞ্চল, মিরাফ্লোরেস ভিজিটর সেন্টার, বায়োমিউসিও, মেট্রোপলিটন ন্যাচারাল পার্ক, ভলকান বারু, প্লেয়া ভেনাও, কালযাডা ডে অ্যামাডর, টাবোগা আইল্যান্ড, পারকুয়ে ন্যাসিওনাল সোভারানিয়া, স্টারফিশ সমুদ্র সৈকত, কিনটা কসটেরা, অ্যানাকন পর্বত, জাপাটিল্লা আইল্যান্ড, কনটাডোরা আইল্যান্ড, ইসলাস সেকাস, গাটুন লকস, ব্রিজ অফ দ্য আমেরিকাস, স্যান লরেঞ্জো দুর্গ, পানামা কানাল মিউজিয়াম।
পানামা দেশের মধ্যেই গড়ে উঠেছে কানাল জোন। কানাল জোনটা সম্পূর্ণ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের শাসনাধীনে। পানামা খালের উত্তরের শহরটির নাম কোলোন আর দক্ষিণের শহরের নাম পানামা।
মেক্সিকো থেকে পানামা পর্যন্ত যে প্যান -আমেরিকান হাইওয়ে এঁকেবেঁকে চলে এসেছে, সে রাস্তাটিই পানামা থেকে আরও শ’ খানেক মাইল দক্ষিণে গিয়ে হঠাৎ যেন ফুরিয়ে গেছে। এখানে রয়েছে হাজারের বেশি মাইল পাহাড়ি রাস্তা। এই রাস্তা চলে গেছে কলম্বিয়ার দিকে।
পানামার বাসিন্দারা খুব মনখোলা এখানকার বার আর চায়ের দোকানগুলো খোলা থাকে অনেক রাত পর্যন্ত। এক কাপ কফি বা চা নিয়ে রেস্তোরাঁয় তিনঘণ্টা বসে থাকলেও কেউ উঠতে বলবে না।
রহস্যময় দ্বীপ ইসলা –
পানামা হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের কয়েকটি দ্বীপে জাহাজে করে যাওয়া যায়। তবে দ্বীপ ঘোরা একমাত্র ধনী ও শখের পর্যটকদেরই পোশায়। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে রহস্যময় ইসলা দ্য দ্বীপ, এই দ্বীপের শহরের নাম হাঙ্গারোয়া। তবে এই শহরকে অনেকেই গ্রাম বলে থাকে। এদের ভাষা পলিনেশিয়ান। হাঙ্গারোয়ায় যারা চিলির থেকে সরকারি কাজে যায় তাদের ভাষা স্পেনিশ। এই এলাকার মানুষের মনে আনন্দ নেই, এই দ্বীপে জন্মানো যেন একটা অভিশাপ। ভেড়া ও অন্যান্য গবাদিপশু দেখাশোনা করাই দ্বীপবাসীদের প্রধান জীবিকা। মাছ ধরাও এদের একটা পেশা। শখও বটে। মেয়েরা সাধারণত বাড়ির কাজ করে। চিলি বা দক্ষিণ আমেরিকার সঙ্গে এদের বংশগত কোনো সম্পর্ক বা যোগাযোগ নেই।