যে উপায়ে করোনার টিকা উদ্ভাবন করলেন বিজ্ঞানীরা


টিকা এখন পর্যন্ত করোনা মহামারিতে প্রধান প্রতিষেধক হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রধান করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবে বিশ্বব্যাপী যখন ত্রাহি অবস্থা তখন টিকা’ই একমাত্র ভরসা।

করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য কার্যকর প্রতিষেধক আবিষ্কারে বিজ্ঞানীরা বিরাট সাফল্যের কাছাকাছি অগ্রগতি অর্জন করেছেন যা বৃদ্ধ এবং দুর্বলদের জীবন বাঁচানোর সহায়ক হবে বলে গবেষনা রিপোর্টে জানানো হয়।

বৃটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক অ্যাষ্ট্রোজেনেকার অভিমত অনুযায়ী, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কৃত্রিমভাবে উৎপন্ন করে তা প্রতিষেধক আকারে প্রয়োগ করা হলে সেটা করোনা  ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়েই প্রতিরোধ করবে যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে প্রমাণ হতে পারে।

মানব শরীরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরীক্ষায় সফল হওয়ায় ২০২০ সালের শরতেই করোনার টিকা বা প্রতিষেধকটি বাজারে আনতে সক্ষম হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এই ওষুধ কোম্পানি কাজ করেছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনার ইন্সষ্টিটিউটের উদ্ভাবন গবেষনায় থাকা প্রতিষেধকটি নিতে আগ্রহীদের জন্য সারাবিশ্বে সরবরাহযোগ্য ৩০ কোটি প্রতিষেধক তৈরিতে সাহায্যের জন্য মহামারী প্রতিরোধপন্থা উদ্ভাবনী জোটের (সিপি) সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল।

সানডে টেলিগ্রাফের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই জোটের একটি সদস্য ভারতের সিরাম ইন্সষ্টিটিউট, যারা অ্যাষ্ট্রোজেনেচার সাথে সমান্তরালভাবে অংশীদারিত্ব নিয়ে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার চিকিৎসাকে উচ্চে তুলে ধরে এখানেই অর্থায়নের বিষয়টি বিবেচনা করেছে।

অ্যাষ্ট্রজেনেচার প্রধান নির্বাহী পাসকাল সরিয়ট জানান যে চিকিৎসা পদ্বতির উদ্ভাবন হচ্ছে তা একটি টীকায় দুটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার সংমিশ্রণ কারন দুটিই নেয়া হলে (দুটি থাকার কারনে) একমাত্র রোগপ্রতিরোধী ক্ষমতা ব্যর্থ হবার সম্ভাবনা কমানো যাচ্ছে।

রোগপ্রতিরোধী ক্ষমতার চিকিৎসা প্রক্রিয়া টীকা উৎপাদনের চেয়ে ব্যয়বহুল। একারনেই এই প্রক্রয়ায় বয়স্ক এবং দুর্বলদের জন্য অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে যারা টীকা দেয়া হলেও খুব ভাল অগ্রগতি দেখাতে পারবেন না বলে মি. সরিয়ট জানান।

আরও পড়ুন: হেঁটেই নিন লাখ টাকা! সাথে আরও বোনাস!

জানা গেছে, গবেষণাটি ভালভাবে পরীক্ষা করার জন্য সম্ভাব্য প্রতিষেধকটির ট্রায়াল শুরু হয়েছিল ব্রাজিলে যেখানে করোনা মহামারী সারা বিশ্বের মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ। আর যুক্তরাজ্য এবং পশ্চিমা বিশ্বে করোনার হার ছিল কমতির দিকে।

করোনা প্রতিষেধক উদ্ভাবনের প্রক্রিয়ায় জানুয়ারীতে আক্রান্ত একটি শিম্পান্জি থেকে ভাইরাসটি সংগ্রহ করে জেনিফার ইন্সষ্টিটিউট এবং অক্সফোর্ড প্রতিষেধক দল কাজ শুরু করেছিল।

এদিকে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষেধক উৎপন্নকারী প্রতিষ্ঠান সেকিরাস ঘোষণা দিয়েছিল তারা তাদের উৎস কোম্পানী সিএসএল, সিপি এবং অষ্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একটি প্রতিযোগী কোভিড-১৯ প্রতিষেধক তৈরির কাজ অষ্ট্রেলিয়ায় করছে।

এই প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের কেন্দ্রস্থল লিভারপুলে একটি এজেন্ট তৈরি করেছে যা মানব শরীরে প্রতিষেধকের উদ্দীপনা বাড়ায়।