পৃথিবীর নবম বৃহত্তম দেশ কাজাখস্তান


কাজাখস্তানের সর্বাধিক প্রচলিত ধর্ম ইসলাম। দেশটির প্রায় ৭১ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী। নৃতাত্ত্বিক কাজাখরা প্রধানত হানাফি মাজহাবভুক্ত সুন্নী মুসলিম। এ দেশে কিছু সংখ্যক শিয়া ও আহমদীয়া মতাবলম্বী মুসলিমও রয়েছে। লিখেছেন দুই বাংলার অন্যতম সেরা ভ্রমণ লেখক লিয়াকত হোসেন খোকন

Table of Contents

কাজাখস্তান এশিয়ার একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এটি বিশ্বের নবম বৃহত্তম দেশ।

কাজাখস্তানের উত্তরে রাশিয়া, পূর্বে গণচীন, দক্ষিণে কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান এবং পশ্চিমে কাস্পিয়ান সাগর ও রাশিয়া।

কাজাখস্তান প্রায় সম্পূর্ণভাবে এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত। তবে দেশটির কিয়দংশ উরাল নদীর পশ্চিমে ইউরোপ মহাদেশে পড়েছে।

কাজাখস্তানের আয়তন ২,৭০০,০০০ বর্গকিলোমিটার। যা কিনা পশ্চিম ইউরোপের সমান আকারের।
জনসংখ্যা ১৭,৫৬৩,৩০০।
কাজাখস্তানের সরকারি ভাষা কাজাখ ভাষা। কাজাখ নামের তুর্কীয় জাতি এ দেশের প্রধান জনগোষ্ঠী।
১৮৭০ থেকে ১৮৭৬ খৃষ্টাব্দের মধ্যে রাশিয়া কাজাখস্তান দখল করে নেয়। ১৯২২ থেকে ১৯৯১ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত কাজাখস্তান দেশটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল।
কাজাখস্তান স্বাধীনতা লাভ করে ১৯৯১ খৃষ্টাব্দে।
কাজাখ একটি তুর্কী শব্দ। এর অর্থ বিস্ময়। কাজাখস্তান বা কাজাকিস্তানের অর্থ বিস্ময়ের ভূমি।
কাজাখস্তানের মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম ও শক্তিশালী অর্থনীতি রয়েছে।
কাজাখস্তানকে বলা হয়, বৃহত্তম ল্যান্ডলকড দেশ।
কাজাখস্তানের উত্তর অংশে অবস্থিত আস্তানা শহর দেশটির রাজধানী। বর্তমানে এর নাম নূর সুলতান।

খ্রিস্টীয় পাঁচ শতকে তুরস্ক ও ইরান থেকে বহু মানুষ এ দেশে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। এ দেশের উপর দিয়ে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য হতো বিখ্যাত সিল্ক রোডের মধ্য দিয়ে।

আস্তানা এর আগে আকমোলা নামে পরিচিত ছিল। এটি এ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। রাজধানী শহরটি তেল সম্পদের জন্য বিখ্যাত। তাছাড়া নূর সুলতান শহরটি শীতল শহর। এই শহরের প্রধান আকর্ষণ হযরত সুলতান মসজিদ, নূর সুলতানে অবস্থিত এই মসজিদটি মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ। রাজধানী শহরের নূর আস্তানা মসজিদটি মধ্য এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ। এই মসজিদের উচ্চতা ১৩০ ফুট। লেবাননের বৈরুতের একজন স্থপতি, নাম চার্লস হেডেকের নকশা করা এই মসজিদটি নূর সুলতান শহরের ইয়েসিল নদীর বাম তীরে অবস্থিত। এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৫ খৃষ্টাব্দে এবং এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০০৮ খৃষ্টাব্দে।

আরও পড়ুন: একদা জর্জিয়া ছিল মুসলমানদের দেশ

কাজাখস্তানের আরও উল্লেখযোগ্য শহর হল –

আত্যরাউ, আলমাটি, আকতুরে, পাভলোদার, সেমে, শ্যামকেন্ত, তুর্কেস্তান।

কাজাখস্তানের পাঁচটি পর্যটন অঞ্চল। আর তা হল –

আস্তানা শহর, আলমাটি শহর, পূর্ব কাজাখস্তান, দক্ষিণ কাজাখস্তান এবং পশ্চিম কাজাখস্তান এলাকা।

বুলেভার্দ শহরটি এ দেশের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।

বুলেভার্দ শহরটির নকশা করেছিলেন বিখ্যাত স্থাপত্যবিদ কিশো কুরোকাওয়া। বুলেভার্দ শহরটি ইশিম নদীর তীরে অবস্থিত। এ শহর থেকে রাজধানী শহর আস্তানায় পায়ে হেঁটে যাওয়া যায়। বুলেভার্দতে প্রসিডেন্টের বাসভবন রয়েছে।

কাজাখস্তানের বৃহত্তম শহর আলমাতিতে জনসংখ্যা ১৭,৯৭,৪৩১ জন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ৮ ভাগ। আলমাতি মহানগরের আয়তন মোট ৯,৩৯৫ বর্গকিলোমিটার। আলমাতি কাজাখস্তানের প্রধান  বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, পাশাপাশি এটি দেশের সবচেয়ে জনবহুল এবং সর্বাধিক মহাজাগতিক নগর। এই শহরটি দক্ষিণ কাজাখস্তানের ট্রান -ইলি আলতু পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ৯০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এর পাশ থেকে বয়ে গেছে আলমাতিঙ্কা নদী।