গুয়েতেমালা: মধ্য আমেরিকায় অবস্থিত চির বসন্তের দেশ


গুয়েতেমালা নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে মধ্য আমেরিকার বুকে দাঁড়িয়ে আছে। দেশটি নিয়ে লিখেছেন দুই বাংলার অন্যতম সেরা ভ্রমণ লেখক লিয়াকত হোসেন খোকন

Table of Contents

গুয়েতেমালা রাষ্ট্রটি মধ্য আমেরিকার একটি প্রজাতান্ত্রিক দেশ। এই রাষ্ট্রের  উত্তর -পশ্চিমে মেক্সিকো, দক্ষিণ – পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর, উত্তর -পূর্বে বেলিজ ও ক্যারিবীয় সাগর এবং দক্ষিণ -পূর্বে হন্ডুরাস ও এল সালভাদর

গুয়াতেমালা মধ্য আমেরিকার সবচেয়ে জনবসতিপূর্ণ রাষ্ট্র।

রুক্ষ পাহাড় ও আগ্নেয়গিরি, নয়নাভিরাম হ্রদ ও সবুজের সমারোহে সমৃদ্ধ এই দেশটিতে মধ্য আমেরিকার এক –

তৃতীয়াংশ জনগণের বসবাস।

এই দেশের উচ্চভূমিতে অবস্থিত গুয়েতেমালা নগরী। এই নগরীর আরেক নাম সিউদাদ দে গুয়েতেমালা। দেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এই গুয়েতেমালা সিটি।

গুয়েতেমালা দেশটি চিরন্তন বসন্তের দেশ। এই দেশের নির্জন এলাকার গাছে গাছে কোকিল ডাকে। ট্যুরিস্টরা কোকিলের কুহু কুহু বা ‘কুউহু কুউহু’ ডাকে মুগ্ধ হয়ে বলে, গুয়েতেমালা ভ্রমণ হলো যে সফল।

গুয়েতেমালার লোকজন ম্প্যানিশ ভাষায় কথা বলে। এর কারণ হল, গুয়েতেমালা দীর্ঘদিন স্প্যানীয়দের অধীনে ছিল। এই কারণে তাঁদের রাষ্ট্র ভাষা হয় স্প্যানিশ।

এ দেশের সংস্কৃতিতে স্প্যানীয় প্রভাব রয়েছে। তবে মায়া প্রভাবও আছে, তবে তা দরিদ্র মায়ান গ্রামবাসীর মধ্যে সীমাবদ্ধ।

গুয়েতেমালার মায়া জাতির লোকেরা উজ্জ্বল রঙের ইয়্যাম ভিত্তিক কাপড় পরে থাকেন। যার মধ্যে আছে ঢিলা বা কেপ শার্ট, ব্লাউজ ও অন্যান্য পোশাক। প্রতিটি মায়া গ্রাম নিজস্ব বিন্যাসে কাপড় বুনে থাকে, ফলে পরনের কাপড় দেখেই ব্যক্তিটি কোন এলাকার তা বলে দেওয়া যায়।

গুয়াতেমালা
গুয়েতেমালার একটি মাস্কের দোকান

এ দেশের লোকজন খৃষ্টান ও মায়া ধর্মাবলম্বী।

দেশটি স্পেন থেকে ১৮২১ খৃষ্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর। এই দেশের আয়তন মোট ১,০৮,৮৮৯ বর্গকিলোমিটার।

লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় গুয়েতেমালাতে আদিবাসী জাতির লোকেদের সংখ্যা অনেক বেশি। তবে অর্ধেক মানুষই মায়া জাতির লোক।

গুয়েতেমালার অর্থনীতি ঐতিহ্যগতভাবে কফি, কলা, চিনি ও অন্যান্য ক্রান্তীয় শস্য রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল।

রাজধানী শহর গুয়েতেমালাতে দর্শনীয় স্থান হল – জাতীয় প্রাসাদ, প্রধান ডাকঘর, জাতীয় সংরক্ষণাগার, জাতীয় গ্রন্থাগার, ক্যাথেড্রাল।

গুয়েতেমালার আরও দর্শনীয় স্থান হল – টিকাল ন্যাশনাল পার্ক, শান্তা ক্যাটালিনা চার্চ, লা অরোরা চিড়িয়াখানা, ছেমাক চাম্পে ন্যাশনাল মাউন্টেন, হিল অফ দ্যা ক্রস, ইগলেসিয়া ডে লা মার্কেড, ক্যাসটেল অফ সান ফেলিপ, প্যালাকিউ নেকিউনাল ডে লা কালটুরা, রিউ ডালকে, ভলকান সান পেড্রো, আগুয়া ভলকেনো, আগ্নেয়গিরি, হাইকিং, জাতীয় উদ্যান – ইত্যাদি।

গুয়েতেমালার ইক্সিমচ একটি প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট যা মায়ান শহর হিসেবে পরিচিত। এই শহরেই মায়া জনগোষ্ঠীর বসবাস। এছাড়া ম্যাথু স্ট্যালন, মাত্তো কলোম্বোও গুয়াতেমালার আকর্ষণীয় স্থান।

গুয়েতেমালা সিটিতে সর্বাধিক পরিচিত গুয়েতেমালার পানীয় হল গালো। যা কি-না দেশটির জাতীয় বিয়ার। যারা গুয়েতেমালা ভ্রমণে যান তারা কিন্তু গালো বিয়ার না খেয়ে ফেরেন না। এটি ওদেশের সংস্কৃতিতে ব্যাপকভাবে আবদ্ধ। কাঁচা গামলা এখানকার খুব বিখ্যাত মদ। এটির খ্যাতিও কম নয়।