বিপন্ন বসুধা: উল্লেখযোগ্য ঘটনাপন্জি


বিগত সাল সারাবিশ্বে বিভিন্ন ঘটনা-দুর্ঘটনার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশ্বকাপ ফুটবল ও টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছে এ বছরেই। লিখেছেন লিয়াকত হোসেন খোকন

Table of Contents

করোনা মহামারি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ২০২২ সালে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ঘূর্ণিঝড়, হিমবাহ ধস, অতিবৃষ্টি, বন্যা, ভূমিকম্প, দাবানল, খরা, তাপপ্রবাহ সবকিছুর সাক্ষী থেকেছে বিশ্ব।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। অথচ বিজ্ঞান বলে বলিয়ান আমরা সদর্পে বলে চলেছি, প্রকৃতি আমাদের হাতের মুঠোয়, প্রকৃতি আমাদের কাছে বশীভূত। কিন্তু এমন দর্প বা ধারণা যে সত্য নয় তা ২০২২ সালের বিভিন্ন সময়ে প্রকৃতির রূদ্ররোষের কাছে অসহায় হয়ে মানুষ নিশ্চিতই উপলব্ধি করতে পেরেছেন। যে প্রকৃতি সৃষ্টির আনন্দে উদ্বেল, সেই প্রকৃতিই আবার ধ্বংসের মারণযজ্ঞেও মেতে ওঠে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। গলছে হিমবাহ। সেই জল বা পানি বাষ্প হয়ে ওপরে উঠছে। তারপরই বৃষ্টি নামছে অঝোরে।

গতবছর গোটা বিশ্বজুড়ে বিশ্বব্যাপী প্রকৃতির তান্ডবে এবং জলবায়ু বিপর্যয়ে যা যা ঘটেছিল তা হল –

আমেরিকায় বম্ব সাইক্লোন। এই সাইক্লোনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট লেক অঞ্চল থেকে একটি ভয়াবহ তুষার -ঝড় বম্ব সাইক্লোনের রূপ নিয়ে গ্রাস করেছিল বিস্তীর্ণ এলাকাকে। এতে কমপক্ষে ৬০ জন মারা গিয়েছিলেন।

ব্রাজিলে বন্যা – গেল মার্চ -এপ্রিলে ব্রাজিলের পেট্রাপোলিস শহরে ভয়াবহ বন্যা হয়। ওই বন্যায় ২৩৩ জনের মৃত্যু হয়।

নাইজেরিয়ায় বন্যা – প্রায় ৬ মাসব্যাপী নাইজেরিয়ার বন্যায় প্রাণ হারান ৬১২ জন।
ফিলিপিন্সে ঘূর্ণিঝড় – ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল ফিলিপিন্সে যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে তাতে ২১৪ জনের মৃত্যু হয়। বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়।

দাবানলের গ্রাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ – প্রচন্ড বাতাস আর খরার কারণে মে মাসে নিউ মেক্সিকোর শহর লাস ভেগাস দাবানলের প্রকোপে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডে ১ লক্ষ ২১ হাজার একরেরও বেশি জঙ্গল পুড়ে যায়। এই খরা পরিস্থিতি শিপিং শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং নির্দিষ্ট ফসলের ফলনকে বিপর্যয় করে তোলে।

ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকম্প – কেবল বন্যা নয়, ভূমিকম্পও ২০২২ সাল জুড়ে সংঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে চোখ রাঙিয়েছে। গত ২১ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ায় আঘাত হানে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প। ওই ভূমিকম্পে সিয়াপ্রুরে ৩৩৪ জন প্রাষ হারান।

এছাড়া হারিকেন ইয়ানের হানায় কিউবায় ব্যাপক ক্ষতি হয়। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বন্যায় মৃত্যু হয়েছিল ১২০০ জনের। ২০২২ সালে আফগানিস্তানে কেবল ভূমিকম্পই নয়, ভয়াবহ বন্যাও হয়েছিল। ভূমিকম্পে ১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় দেশটিতে। বন্যায় মৃত্যু হয় ১৮২ জনের। দক্ষিণ আফ্রিকার বন্যায় ৪৬১ জন মারা যান। পূর্ব আফ্রিকার অধিকাংশ এলাকায় ব্যাপক খরা দেখা দিয়েছিল। ওই খরায় কেবল উত্তর -পূর্ব উগান্ডায় ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল খাবারের অভাবে। ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হারিকেন ইয়ানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ফোর্ট মায়ার্সে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।