রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা – ইউরোপের এই উদীয়মান দেশে কাজের সুযোগ খুঁজছেন? বাংলাদেশ থেকে হাজারো যুবক-যুবতী প্রতি বছর এখানে চলে যান, কারণ রোমানিয়া সেনজেন জোনে যোগদান করার পরও কাজের ভিসা প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ এবং বেতন আকর্ষণীয়। কিন্তু সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনের কারণে প্রস্তুতি নিয়ে এগোনো জরুরি। এই নির্দেশিকায় ধাপে ধাপে জানুন আবেদনের উপায়, কাগজপত্র, খরচ এবং সময়কাল – যাতে আপনার স্বপ্নের ইউরোপীয় যাত্রা সহজ হয়।

রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়

রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া এখন আর আগের মতো জটিল নয়, বিশেষ করে যদি সরকারি চ্যানেল ব্যবহার করেন। ২০২৫ সালে রোমানিয়া সম্পূর্ণ সেনজেন সদস্য হয়েছে, ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের লেবার মার্কেট রুলস প্রয়োগ হয়েছে – এতে বাংলাদেশিদের জন্য কোটা বেড়েছে কনস্ট্রাকশন, আইটি এবং হেলথ সেক্টরে। প্রথম ধাপ: একটি বৈধ জব অফার সুরক্ষিত করুন রোমানিয়ান এমপ্লয়ারের কাছ থেকে, যা ইউআইজি (General Inspectorate for Immigration) এ রেজিস্টার্ড। বাংলাদেশে রোমানিয়ান এম্বাসি না থাকায়, আবেদন করতে হবে নিকটস্থ দূতাবাসে (যেমন নয়াদিল্লি বা আনকারা) অথবা অনলাইনে igi.mai.gov.ro পোর্টালে। সরকারি উপায়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের (BMET) ওয়েবসাইট bmmet.gov.bd চেক করুন – এখানে নিয়মিত সার্কুলার প্রকাশ হয়। অ্যাকাউন্ট খুলে জব অ্যাপ্লাই করুন, তারপর ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু হলে D-এ টাইপের ভিসা আবেদন করুন। বেসরকারি এজেন্সি ব্যবহার করলে ঝুঁকি বাড়ে, তাই অফিসিয়াল চ্যানেল প্রায়োরিটাইজ করুন। অতিরিক্ত টিপ: রোমানিয়ান ভাষা বা ইংরেজি দক্ষতা দেখালে চান্স বাড়ে।

রোমানিয়া যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে?

রোমানিয়া যেতে কাজের উদ্দেশ্যে কাগজপত্রগুলো সঠিকভাবে প্রস্তুত করলে প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। ডিজিটাল সাবমিশন চালু হয়েছে, যা পেপারওয়ার্ক কমিয়েছে। মূলত, সব ডকুমেন্ট ইংরেজি বা রোমানিয়ানে ট্রান্সলেটেড এবং নোটারাইজড হতে হবে। এখানে অপরিহার্য লিস্ট:
  • পাসপোর্ট: কমপক্ষে ১২ মাস মেয়াদসম্পন্ন, স্ক্যান কপি সহ।
  • ছবি: ৩.৫x৪.৫ সেমি, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে সাম্প্রতিক ৪ কপি।
  • পরিচয়পত্র: জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম সনদের সত্যায়িত কপি।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট, EU-স্ট্যান্ডার্ডে ভেরিফাইড।
  • পেশাগত দক্ষতা: স্কিল সার্টিফিকেট (যেমন ITIL বা ওয়েল্ডিং) এবং ওয়ার্ক এক্সপিরিয়েন্স লেটার।
  • জব ডকুমেন্ট: অফার লেটার, লেবার কনট্রাক্ট এবং ওয়ার্ক পারমিট (এমপ্লয়ার থেকে)।
  • স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা: মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট (TB, HIV ফ্রি) এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স (BMET থেকে)।
  • অন্যান্য: কভার লেটার (উদ্দেশ্য বর্ণনা), ব্যাংক স্টেটমেন্ট (ন্যূনতম ৫০০ ইউরো) এবং ভিসা ফর্মের প্রিন্টআউট।
এগুলো স্ক্যান করে আপলোড করুন। টিপ: BMET-এর মাধ্যমে প্রি-ভেরিফিকেশন করলে রিজেকশন কমে।

রোমানিয়া কাজের ভিসা কত টাকা?

রোমানিয়া কাজের ভিসার খরচ ২০২৫-এ সামান্য বেড়েছে সেনজেন ইন্টিগ্রেশনের কারণে, কিন্তু এখনও অ্যাফোর্ডেবল। অফিসিয়াল ফি প্রায় ৬০-১২০ ইউরো (৮,০০০-১৬,০০০ টাকা), যা কনস্যুলার ফি এবং পারমিট চার্জ কভার করে। সরকারি চ্যানেলে (BMET) মোট খরচ ৪-৬ লক্ষ টাকা, যাতে ট্রেনিং, মেডিকেল এবং ট্রাভেল অন্তর্ভুক্ত। বেসরকারি এজেন্সিতে ৮-১২ লক্ষ টাকা লাগতে পারে, কিন্তু দালাল এড়িয়ে চলুন – অনেক ক্ষেত্রে স্ক্যাম হয়। অতিরিক্ত: ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স (৫,০০০ টাকা) এবং ট্রান্সলেশন (১০,০০০ টাকা) যোগ করুন। সঠিক রেটের জন্য igi.mai.gov.ro চেক করুন। আরও জানতে পারেনঃ মালদ্বীপ ভিসার দাম কত ( আপডেট তথ্য )

রোমানিয়া কাজের বেতন কত?

রোমানিয়া কাজের বেতন ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হলেও বাংলাদেশের তুলনায় ১০ গুণ বেশি, যা জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। ২০২৫-এ মিনিমাম ওয়েজ ৩,৩০০ লেউ (প্রায় ৮০,০০০ টাকা) মাসিক, কিন্তু সেক্টরভেদে ভ্যারি করে। উদাহরণ:
  • কনস্ট্রাকশন/ম্যানুয়াল লেবার: ৪,০০০-৬,০০০ লেউ (৯৫,০০০-১,৪০,০০০ টাকা), ওভারটাইম সহ।
  • আইটি/টেক: ৭,০০০-১২,০০০ লেউ (১,৬৫,০০০-২,৮০,০০০ টাকা), এক্সপিরিয়েন্সডদের জন্য।
  • হসপিটালিটি: ৩,৫০০-৫,৫০০ লেউ (৮২,০০০-১,৩০,০০০ টাকা)।
ট্যাক্স কাটার পর নেট ৭০-৮৫% পান, প্লাস ফ্রি হাউজিং/ট্রান্সপোর্ট। অভিজ্ঞতা এবং লোকেশন (বুকারেস্ট বনাম ছোট শহর) অনুযায়ী বোনাস যোগ হয়।

রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট পেতে কত দিন লাগে?

রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট পেতে সময় লাগে ৩০-৯০ দিন, ডকুমেন্টের সম্পূর্ণতার উপর নির্ভর করে। ২০২৫-এ ডিজিটাল প্রসেসিং চালু হয়েছে, যা পূর্বের ৪৫-৬০ দিনের থেকে কমিয়ে ২১ দিনে পারমিট ইস্যু করা সম্ভব। প্রক্রিয়া: জব অফার জমা > পারমিট অ্যাপ্রুভাল (১৫ দিন) > ভিসা ইন্টারভিউ (১০-১৫ দিন) > ইস্যু (৭ দিন)। সামারে দেরি হতে পারে, তাই অ্যাডভান্স আবেদন করুন। ট্র্যাকিংয়ের জন্য অনলাইন পোর্টাল ব্যবহার করুন।

শেষ কথা

রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে ইউরোপীয় জীবন শুরু করুন – সঠিক প্রস্তুতি নিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়িত করুন। সরকারি চ্যানেল অনুসরণ করে ঝুঁকি এড়ান এবং নিয়মিত আপডেট চেক করুন। সফল যাত্রার শুভকামনা!