তোমরা রচিলে যারে নানা অলংকারে


ভুলিব না তোমারে

লিয়াকত হোসেন খোকনের সমকালীন বিষয়াবলীর উপর পর্যবেক্ষণের একটি নাট্যরূপ।

প্রথম দৃশ্য –

সজল – চুরি হয়, অপরাধ হয়, ধর্ষণ হয়, লুটপাট হয়, যারা এর সঙ্গে জড়িত – তাদের কি বিচার হয়?

দীপক – বিচার না ছাই কচু। রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরির ঘটনা ১৮ বছর পার হয়ে গেল। আজ পর্যন্ত নোবেল পুরষ্কার উদ্ধার তো দূরের কথা, চোর কে (?)

তাও জানতে পারল না।

মালেকার প্রবেশ।

মালেকা – একজন বাঙালি হিসেবে বড্ড দুঃখ হয়, রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরষ্কার চুরি হয়। চোরকে ধরে বিচারের আওতায় আনা যায় না। তাহলে সাধারণ মানুষ গুম হলে তারা কার কাছে বিচার চাইবে?

দীপক – মহান সৃষ্টি কর্তার কাছে ছাড়া আর কার কাছে বিচার চাইবে?  যার নাই কেউ তার আছে ভগবান। কত লুটেরা লুটপাট করে বীরের বেশে চলে।

যার সম্পদ হয় লুট, সে বিচার চাইতে গেলে হয় খুন।

বিচার যে চায়, তার মেয়ে হয় ধর্ষিতা।

মালেকা – যে নোবেল পুরষ্কার চুরি করল, সে একবারও ভাবল না, কবিগুরু একজনই হন।

যে চুরি করেছে, তার কি ধর্ম নেই?

গত শতাব্দীর আলোড়ন সৃষ্টিকারী 4টি হিন্দী সিনেমা

দৃশ্য -দুই

সীমান্তের দিকে রওনা দিচ্ছেন নাগরিকরা।

সজল – এই যে দিদিমণি, আপনারা কোথায় যাচ্ছেন?

দিদি – জন্ম নিয়েই পাপ করেছি। না হলে আজ আমাদের দৈন্যদশা হবে কেন? ভারতে এসেছিলাম নাগরিকত্ব পাবার আশায়। কিন্তু এই আশা আর পূরণ হয়নি।

দাদা – ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হবার ভিত্তিতে ভারত সরকার নাগরিকত্ব দেবে বলে আমরা আশা করেছিলাম।

সজল – আপনারা কতজন এসেছিলেন?

দাদা – পাকিস্তান থেকে আমরা মোট ৮০০ জন হিন্দু এসেছিলাম। কিছুদিন রাজস্থান রাজ্যে থেকেছিলাম।

দিদি – ভারতে বসবাসরত পাকিস্তানি সংখ্যালঘু অভিবাসীদের দুঃখ -দুর্দশা নিয়ে সবসময় সোচ্চার থাকে এই সীমান্ত লোক সংগঠন। অনলাইনে আমরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলাম।

দাদা – কিন্তু এ ব্যাপারে অগ্রগতি শূন্যের কোঠায়। এ কথা জানতে পেরে মনের দুঃখে ভারত ছেড়ে চলে যাচ্ছি।

সজল – এতে ভারতের কি সুনাম হল?

দাদা – ভারতকে বদনাম করানোর জন্য পাকিস্তানি এজেন্সিগুলি আমাদের ব্যবহার করবে, যা কিনা মিডিয়ার সামনে হাজির করানো হবে। পাকিস্তানি এজেন্সি দিয়ে বলানো হবে, ভারতে হিন্দুরা দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন।

 

দৃশ্য – তিন

রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল দীপক ও সজীব। তারা দেখতে পায় কিছু লোকের জট। সেখানে পুলিশও রয়েছে।

পুলিশ – নকল সালমান খান সেজেছ। নকল সালমান খান হয়েছ – তাই না।

একজন দর্শক – স্যর নেটমাধ্যমে ওর ফ্যান অনেক। নেটে দেখেছি, এক একটা ইনস্টাগ্রাম রিলে লক্ষ লক্ষ ভিউ হয়।

সজীব – ফেসবুকে তো আমরা এই নকল সালমান খানকে প্রায়ই দেখতে পাই। সেই নকল সালমান খানকে পড়তে হল পুলিশ গেরোয়।

দর্শক – শান্তি বিঘ্ন করার অভিযোগে নকল সালমান খান গ্রেফতার হওয়ায় আমরা খুব খুশি।

পুলিশ – আজম আনসারি থেকে সালমান খান সেজেছ, থানায় গেলে বুঝবি নে – নকলের জন্য তোর ভাগ্যে কি কি শাস্তি রয়েছে।

দর্শক – স্যর ফেসবুকে ওকে কখনও ‘মুঝসে শাদি করোগি’ গানে সালমানের মতো স্টেপ, কখনও ‘তেরে নাম’ -এর রাধে হয়ে রাস্তায় বেরনো বা ভাইজানের মতো খালি গায়ে দাঁড়িয়ে সিগারেটে সুখটান দিতে দেখেছি।

নকল সালমান খানকে পুলিশের গাড়িতে উঠানো হল।

একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে সজীব জিজ্ঞাসা করল।

সজীব – স্যর,  নকল সালমান খানের অপরাধ কি? যে জন্য জেলে নিয়ে যাচ্ছেন?

পুলিশ কর্মকর্তা – ক্লক টাওয়ারে ইনস্টাগ্রাম রিল বানাচ্ছিল সে। তার জন্য রাস্তা আটকে যায়। ব্যাপক ভিড়ে দাঁড়িয়ে যায় একের পর এক গাড়ি। এই কারণে নকল সালমান খানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫১ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশের গাড়ি চলে গেল।

দৃশ্য -চার

দীপক ও মালেকা হাঁটতে হাঁটতে একটি ভবনের সামনে এসে দেখতে পায় হাতেগোনা কয়েকজন লোক পায়েস খাচ্ছে।

পেছনে লেখা রয়েছে ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একশো একষট্টিতম জন্মদিন’।

এক যুবক এসে মালেকা ও দীপকের হাতে পায়েসের প্লেট তুলে দেয়।

মালেকা – দাদা, কি উপলক্ষে এ পায়েস?

যুবক – আমার নাম জিতেন্দ্র রায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একশো একষট্টিতম জন্মদিন পালন করছি। সখ জাগল, পথ চলতি মানুষজনকে পায়েস খাইয়ে রবিঠাকুরের জন্মদিন পালন করছি।

মালেকা – বাঙালির সংস্কৃতিই জন্মদিনে মুখে পায়েস তুলে দেওয়া।

জিতেন্দ্র – সেই বাঙালি রীতি মেনে কবিগুরুর জন্মদিন পালন করি। বিশিষ্টজনেরা এসেছেন। খেতে থাকুন এবং আলোচনায় তারা কি বলেন একটু শুনে যান।

দীপক – জিতেন্দ্রদা, আপনার তুলনা হয় না। আপনার মতো পাড়ায় পাড়ায় যদি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালিত হত তাহলে প্রতিটি মানুষের চোখ খুলে যেত।

মালেকা – রবিঠাকুর আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে আমরা সবাই বিভাজনের বিরুদ্ধে সৌহার্দ্য -সম্প্রীতির মাধ্যমে দেশ গড়ে তুলি। সেই ভাবধারা আজ আমাদের আবার অনুধাবন করা প্রয়োজন।

আলোচক – রাবীন্দ্রিক চেতনা হোক সারা বছরের সাধনা। আজকের হিংসা -বিধ্বস্ত পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া কোনও নিস্তার নেই। কেননা, প্রকৃত অর্থে বিশ্ব নাগরিক ছিলেন কবিগুরু, যদিও তাঁকে কেন্দ্র করেই উপমহাদেশের জাতীয় জীবন আলোড়িত হয়েছিল এবং হচ্ছে।

ভুলিব না তোমারে

২য় আলোচক – রাবীন্দ্রিক চেতনার রেশ একটা জরুরি বিষয়। মানে, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কেবল পঁচিশে বৈশাখের বিষয় করে না রেখে সারাবছর তাঁর দর্শনের অনুধাবন ও অনুসরণ করে যাওয়া। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ১৬১ তম জন্মজয়ন্তী পেরিয়েও কীভাবে নয়া প্রজন্মকে ভাবিত, প্রভাবিত করতে পারেন, সেটা এক আশ্চর্যের বিষয়। কেবল উপমহাদেশের বিষয় নন কবিগুরু। তিনি গোটা বিশ্বের সম্পদ। তাঁকে ঘিরে নিত্য -নতুন গবেষণা আজও অব্যাহত। প্রায় প্রতিদিনই রবীন্দ্র জীবনের অনালোকিত দিক আবিস্কৃত হচ্ছে।

আলোচক – আসলে রবীন্দ্রনাথ জাতির জীবনে যে গভীর জীবন চেতনার বীজ বপন করতে চেয়েছিলেন, তার অমোঘ আবেদন স্বাভাবিকভাবেই দেশ ও কালের সীমানা অতিক্রম করে পৌঁছে গেছে এক বৃহত্তর পরিসরে। সে হিসেবে রবীন্দ্রনাথ যে সর্বোপরি মানুষ তৈরির ওপরই সমধিক গুরুত্ব আরোপ করে গেছেন, তা অনস্বীকার্য। আজকালকার যুগে দেশে দেশে যদি ভাল মনের, উন্নত চিন্তাধারার মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তা হলে সেটা একটা বিশেষ দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরেও গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম।

দুঃখের বিষয় হলো, রবীন্দ্রনাথের মতো চিন্তাশীল মনীষীর দেখানো পথে রাষ্ট্র পরিচালনার পথে অগ্রসর হতে একধরনের অনীহা ও সযত্নলালিত অপারগতা প্রশ্রয় পাচ্ছে বিভিন্ন দিকে। বিশেষ করে আমাদের সমাজজীবনেও রবীন্দ্রনাথ যতটা চির পথের সঙ্গী হওয়া উচিত ছিলেন, সেটা কিন্তু এখনও হয়ে ওঠেননি। এখনও অনেক পথ চলা বাকি রয়েছে। আর আমাদের দেশের রাজনৈতিক জীবনেও যদি একটা মূল্যবোধনির্ভর সুশ্রী আনয়ন করতে হয়, তা হলে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া কোনও গত্যন্তর নেই। সর্বোপরি রবীন্দ্র -নির্ভরতায় দেশের মানুষের দায়বদ্ধতাই বেশি, কেননা যেহেতু কবিগুরু ব্রিটিশ -ভারতীয় ছিলেন।

আলোচক – আজ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত আমাদের সমাজজীবন। মানুষে -মানুষে ভেদাভেদ, কলহ ইত্যাদি লজ্জাজনক পর্যায়ে। রবীন্দ্রনাথের জন্মরাজ্য বঙ্গের বা বাংলাদেশের সার্বিক হাল এখন আমাদেরকে খুব একটা গর্বিত করে না। শিল্প, শিক্ষা, সংস্কৃতি সবকিছুতেই একটা কলুষ ভাব নজরে আসছে। অথচ কেবল ঘটা করে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করা এবং গান, কবিতা আবৃত্তি করলেই দায় শেষ হয়ে যাচ্ছে না বাংলা ও বাঙালির। মূল বিচার্য হচ্ছে, রবীন্দ্রকে নিজেদের জীবনে, শিক্ষায়, আচরণে, সমাজ এমনকী রাজনৈতিক জীবনেও কতটা শ্রদ্ধার সঙ্গে অনুসরণ করছে বাংলা। দেখতে হবে ব্যক্তিজীবনে রবীন্দ্র -আদর্শ অনুসরণে কতটা অবগুণ বিসর্জন দিয়ে মনুষ্যত্বের কতটা কাছাকাছি আসতে পেরেছেন অনুসারীরা।

গ্যাস-বিদ্যুৎ ও অন্যান্য পরিষেবার সরবরাহকারী নিয়মিত পরিবর্তন করুন

দীপক – জাতীয় জীবনেও রবীন্দ্রনাথ আরও বেশি অনুসৃত হওয়া দরকার। প্রকৃত জাতীয় সংহতি প্রতিষ্ঠায় যিনি কেবল জাতীয় সঙ্গীতই নয়, বরং নিজের সমূদয় কাব্য, সাহিত্য দিয়ে মহামিলনের বার্তা দিয়ে গেছেন, তাকে ‘নতুন’ করে আবিষ্কার করতে এগিয়ে আসতে হবে জাতিকে।

মালেকা – প্রশ্ন জাগে মনে, আজকের মা -বাবারা কি

ছেলেমেয়েদের পড়তে বলেন রবীন্দ্রনাথের ‘শান্তিনিকেতন’? তাঁদের মধ্যে এই বোধটুকু কি কাজ করে এখনও যে, যৌবনে বা কৈশোরে রবীন্দ্রনাথের ‘শান্তিনিকেতন’ প্রবন্ধগুচ্ছ না পড়লে, পরে পড়ে কোনও লাভ নেই! এই প্রবন্ধমালা সারাজীবন ধরেই পড়তে হয়। কিন্তু শুরু হওয়া চাই কিশোর বয়স থেকেই। প্রশ্ন হল, কেন আমরা রবীন্দ্রনাথকে হারিয়ে ফেললাম? সহজ উত্তরটি হল, তাঁকে শুধু ছিপ ফেলে গাঁথতে চেয়েছিলাম। জাল ফেলে ধরতে চাইনি। আমাদের বঁড়শিতে শুধু তাঁর গানগুলি, তা -ও কয়েকটি মাত্র চেনা গান, উঠে এল। এবং রবীন্দ্রনাথের কিছু গান গাওয়া, কিছু কবিতা পাঠ হয়ে দাঁড়াল আমাদের রবীন্দ্রচর্চা! সামগ্রিক রবীন্দ্রনাথকে আমরা বুঝতেও চাইনি, নাগালের মধ্যে, বোধের বৃত্তে পেতেও চাইনি।

আলোচক – হালের বাঙালি সংস্কৃতির একটি বিশেষ অঙ্গ রবীন্দ্রনাথের গান। বাকি রবীন্দ্রনাথ আমাদের সংস্কৃতি থেকে কবে কখন ধীরে ধীরে ঝরে গিয়েছেন। পঁচিশে বৈশাখ বা বাইশে শ্রাবণে এই যে বাঙালির আকস্মিক মাতামাতি আর হুজুগ, তার সিংহভাগ জুড়েই তো থাকে রবীন্দ্রনাথের কিছু চেনা গান এবং চেনা কবিতা। এবং মাঝে মাঝে কোনও কোনও সঞ্চালকের অর্বাচীন বাচালতা, যা টেনে নিয়ে যায় অধিকাংশ রবীন্দ্র -অনুষ্ঠান। একঘেয়েমি থেকে একঘেয়েমি থেকে একঘেয়েমি। থোড় -বড়ি -খাড়া। খাড়া -বড়ি -থোড়। নতুন কোনও ভাবনা, নতুন কোনও দৃষ্টিকোণ, কোনও আধুনিক নব উন্মোচন – এসবের বালাই কিন্তু আমাদের বাৎসরিক রবীন্দ্রচর্চায় কখনও আসে বলে মনে হয় না।

Untitled design 2

আলোচক – যতই আমরা রবীন্দ্রনাথ -রবীন্দ্রনাথ করি না কেন, তাঁকে আমরাই দাঁড় করিয়েছি এক অমোঘ ক্রাইসিসের সামনে। বাঙালির রবীন্দ্রনাথ ঝরতে -ঝরতে, হারাতে -হারাতে ক্রমাগত মিলিয়ে যেতে -যেতে, ঝাপসা হতে -হতে আসন্ন লুপ্তির মুখে।

আরও পড়ুন: অপরাধ: সমসাময়িক ঘটনাপ্রবাহের নাট্যকথন

আমাদের একান্ত সীমিত, খঞ্জ রবীন্দ্রচর্চা শেষ পর্যন্ত ফেলে দিয়েছে অস্তিত্বের সংকটে। এই সংকট তিনি পেরতে পারবেন কি না আদৌ, আমরা জানি না।

প্রশ্ন একটাই, সত্যিই যদি রবীন্দ্রনাথ পেরতে না – পারেন তাঁর অস্তিত্বের সংকট, যদি বিন্দু থেকে বিন্দুতর হতে -হতে তিনি লুপ্ত হন, বা জন্মদিন ও মৃত্যুদিনের শিখরে চড়ে বছরে দু’বার দেখা দিয়ে অতলে তলিয়ে যান, যদি তাঁর আদর্শ, দর্শন, জীবনবীক্ষণ, ধর্মচেতনা এবং বিপুল ব্যাপ্তি ও মহিমময় প্রকাশ ধরা না দেয় এখনকার বাঙালির নাগালে, তবে তিনি অতীতের – একালের নয়, এটাই ধরে নিতে হবে।

আলোচনা শেষে সংগীত।

তোমরা রচিলে যারে নানা অলংকারে

তারে তো চিনি নে আমি,

চেনেন না মোর অন্তর্যামী

তোমাদের স্বাক্ষরিত সেই মোর নামের প্রতিমা।

বিধাতার সৃষ্টিসীমা

তোমাদের দৃষ্টির বাহিরে।

কালসমুদ্রের তীরে

বিরলে রচেন মূর্তিখানি

বিচিত্রিত রহস্যের যবনিকা টানি

রূপকার আপন নিভৃতে।

বাহির হইতে

মিলায়ে আলোক অন্ধকার

কেহ এক দেখে তারে, কেহ দেখে আর।

খন্ড খন্ড রূপ আর ছায়া,

আর কল্পনায় মায়া,

আর মাঝে মাঝে শূন্য, এই নিয়ে পরিচয় গাঁথে

অপরিচয়ের ভূমিকাতে।

অনুষ্ঠান শেষে জিতেন্দ্র রায় তার ভিজিটিং কার্ড দীপক ও মালেকার হাতে তুলে দিল।

মালেকার হাতটা জিতেন্দ্র’হাতে লাগতেই দু’জনার মুখে হাসি।

মালেকা মনে মনে ভাবল, জিতেন্দ্র কি বুঝেছে, তাকে যে আমার ভালো লেগেছে!

জিতেন্দ্রও তাই ভাবল, সে মুসলিম হোক তাতে আমার কি? তাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেলে এ জীবন ধন্য হবে। এমন সুন্দর মেয়ে এ তল্লাটে তো একজনও দেখছি না।