দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি – এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে দেখা যায়, দেশটির অর্থনীতি দ্রুত বিকশিত হওয়ায় বিভিন্ন সেক্টরে দক্ষ কর্মীর প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। বাংলাদেশী যুবকদের জন্য এটি একটি সোনার সুযোগ, কারণ সরকারি ইপিএস প্রোগ্রামের মাধ্যমে বৈধভাবে যাওয়া সম্ভব। নির্মাণ ক্ষেত্রে শ্রমিক থেকে শুরু করে প্রযুক্তি সেক্টরের বিশেষজ্ঞ – সবাই এখানে স্থান পাচ্ছেন। চলুন, বিস্তারিত জেনে নিই কোন কোন কাজে চাহিদা সবচেয়ে বেশি, কীভাবে আবেদন করবেন এবং কত বেতন পাবেন।
নির্মাণ ও ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরের সুযোগ
দক্ষিণ কোরিয়ার শহরায়ন প্রকল্পগুলোতে বিল্ডিং নির্মাণের কাজ অব্যাহত রয়েছে। এখানে সাধারণ শ্রমিক, সাইট সুপারভাইজার এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। অটোমোবাইল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররাও উচ্চ চাহিদায় রয়েছেন, বিশেষ করে হুন্ডাই বা কিয়া মতো কোম্পানিতে। অভিজ্ঞতা থাকলে সুযোগ আরও বাড়ে, কারণ প্রকল্পগুলোতে দক্ষ হাতের অভাব রয়েছে।
পর্যটন ও হসপিটালিটি ক্ষেত্র
সিউল বা বুসানের মতো পর্যটন শহরে হোটেল এবং রেস্তোরাঁর সংখ্যা বাড়ছে। ওয়েটার, শেফ এবং হোটেল ম্যানেজারদের চাহিদা অন্যান্য কাজের চেয়ে বেশি। বিদেশী পর্যটকদের সেবা দেওয়ায় ইংরেজি জানা ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পান। এ সেক্টরে কাজ করে অতিরিক্ত টিপসও পাওয়া যায়, যা আয় বাড়ায়।
তথ্য প্রযুক্তি এবং ডিজাইন
দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি হাব। ওয়েব ডেভেলপার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং গেম ডেভেলপারদের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। স্যামসাং বা এলজি মতো কোম্পানিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। গবেষণা ও উন্নয়ন ক্ষেত্রে বায়োটেক বিশেষজ্ঞরা প্রয়োজন, যা ভবিষ্যতের জন্য লাভজনক।
স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা
বয়স্ক জনগোষ্ঠী বাড়ায় নার্স, কেয়ারগিভার এবং ডাক্তারদের চাহিদা উচ্চ। ইংরেজি শিক্ষক (ESL) পদগুলোতে বাংলাদেশীরা সহজে স্থান পান, বিশেষ করে স্কুল বা প্রাইভেট ইনস্টিটিউটে। কৃষি কাজেও সুযোগ রয়েছে, যেখানে ফার্মিং শ্রমিকদের প্রয়োজন।
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি – এটি নির্ভর করে আপনার দক্ষতার উপর। সর্বনিম্ন বেতন শুরু হয় প্রায় ৭০ হাজার টাকা থেকে, যা অভিজ্ঞতায় ২ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে। কৃষি কাজে ১ লাখ থেকে ১.৩ লাখ টাকা সাধারণ।
বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার সহজ পথ: ইপিএস প্রোগ্রাম
সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হলো ইপিএস (Employment Permit System)। প্রথমে EPS-TOPIK পরীক্ষায় পাস করুন, তারপর দক্ষতা যাচাই এবং মেডিকেল করে E-9 ভিসা নিন। লটারি পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, যা বোয়েসেলের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে করা যায়। প্রাথমিক ফি ৫০০ টাকা, চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন ৩০০০-৩২০০ টাকা।
২০২৫ সালের লটারি শীঘ্রই শুরু হবে – নিয়মিত https://boesl.gov.bd/ চেক করুন। রেজাল্ট পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে অনলাইনে দেখা যায়। লটারি ছাড়া E-7 (দক্ষ কর্মী), D-2 (স্টুডেন্ট) বা অন্য ভিসায় যাওয়া সম্ভব। ফ্লাইটে ৫-২০ ঘণ্টা লাগে। মুদ্রা কোরিয়ান ওন (১ ওন ≈ ০.০৮৩ টাকা)।
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি – উত্তর হলো দক্ষতাভিত্তিক। প্রশিক্ষণ নিয়ে আবেদন করুন, সাফল্য আসবেই।
প্রায়শ্চারিত প্রশ্নোত্তর (FAQs)
দক্ষিণ কোরিয়া কৃষি কাজের বেতন কত?
সাধারণত ১ লাখ থেকে ১.৩ লাখ টাকা।
দক্ষিণ কোরিয়া ১ ওন বাংলাদেশের কত?
প্রায় ০.০৮৩ টাকা।
দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রার নাম কী?
কোরিয়ান ওন (KRW)।
বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত সময় লাগে?
৫ থেকে ২০ ঘণ্টা ফ্লাইটে।
কোরিয়া লটারি ২০২৫ আবেদন কবে?
বোয়েসেল ওয়েবসাইটে ঘোষণা হবে।
লটারি ছাড়া কোরিয়া যাওয়ার উপায়?
E-7, D-2, D-8 বা C-3 ভিসায়।
এই তথ্যগুলো অনুসরণ করে প্রস্তুতি নিন – স্বপ্ন পূরণ হোক!