তুরস্কে যে সকল মানুষেরা কাজের উদেশ্যে যাএা করতে চান তাদের অবশ্যই তুরস্ক কাজের বেতন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। কারন তুরস্ক কাজের বেতন সম্পর্কে যদি না জেনে তুরস্কে যাওয়ার ফলে আপনার আর্থিকভাবে ক্ষতিও হতে পারে তেমনি আপনি আর্থিকভাবে লাভবানও হতে পারেন।এই আলোচনায় আজ আমরা তুরস্ক দেশটি কেমন, তুরস্ক কাজের বেতন ও তুরস্কের কাজের ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
Table of Contents
- তুরস্ক দেশটি সম্পর্কে
- তুরস্ক কাজের বেতন
- তুরস্কে কাজ করার সুযোগ
- তুরস্কের কাজের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- তুরস্কের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চেক
- বহু জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
- শেষ কথা
তুরস্ক দেশটি সম্পর্কে
তুরস্ক হচ্ছে ইউরোপ ও এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত একটি দেশ। তুরস্ক দেশটির সরকারি নাম প্রজাতন্ত্রী তুরস্ক। তবে তুরস্কের প্রায় পুরো অংশ এশিয়ার আনাতোলিয়া উপদ্বীপে অবস্থিত, ক্ষুদ্র অংশ ইউরোপে অবস্থিত। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দেশটির মাটি খুবই উর্বর। তুরস্ক বিশেষ করে তার ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন স্থানের জন্য বেশ পরিচিত সারা পৃথিবীতে। অনেক ঐতিহাসিক স্থাপত্য, যেমন আয়াসোফিয়া, ব্লু মসজিদ এবং টপকাপি প্রাসাদ রয়েছে। তুর্কিয়ান রিভিয়েরা তার সুন্দর সমুদ্র সৈকত এবং রিসোর্টের জন্য বিখ্যাত। এছাড়া তুরস্কে অনেক কাজের ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে যেখানে প্রতিবছর নিয়োগ দেওয়া হয়।এ সকল নিয়োগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক শ্রমিক তুরস্কের কাজের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। তেমনি বাংলাদেশ ও ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ শ্রমিক তুরস্কে কাজের উদ্দেশ্যে যান। দেশটির মানুষেরা বিদেশী মানুষের সাথে খুবই ভালো ব্যবহার করেন ও তারা খুবই আত্মীয়তা পরায়ন। তবে এবার তুরস্ক কাজের বেতন এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
তুরস্ক কাজের বেতন
তুরস্কে বিশেষ করে কাজের উপর ভিত্তি করে মাসিক বেতন প্রদান করা হয় শ্রমিকদের ও চাকরিজীবীদের। তবে তুরস্কে একজন মানুষের সর্বনিম্ন বেতন ৬৩০০ লিরা যা বাংলা টাকায় প্রায় ২৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ তুরস্কের কাজের বেতন সর্বনিম্ন ২৩ হাজার টাকা। তবে বেশ কিছু কাজ রয়েছে সকল কাজে মূলত ভালো মানের বেতন লাভ করা যায়। এমন কিছু কাজ রয়েছে তার মধ্যে:
- একজন নির্মাণ শ্রমিক গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৮ হাজার লিরা অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় ৩০ হাজার টাকা প্রতিমাসে আয় করতে পারবেন।
- যে সকল শ্রমিক তুরস্কের টেক্সটাইল খাতে অর্থাৎ গার্মেন্টসে কাজ করেন তারা প্রতি মাসে ৭৫০০ লিরা অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ২৮ হাজার টাকা বেতন পান প্রতিমাসে করে গড়ে।
- তুরস্কে সফটওয়্যার ডেভলপার বা সফটওয়্যার কর্মীর বেশ চাহিদা রয়েছে একজন সফটওয়্যার ডেবোলপার প্রতি মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকা থেকে ৭৫ হাজার টাকা বেতন পান।
- এছাড়া তুরস্কে যারা ডাক্তার হিসেবে কর্মরত থাকেন তারা প্রতি মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা বেতন পান।
তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত তুরস্কের কাজের নূন্যতম বেতন ছিল ৫৫০০ লিরা যা টাকার হিসেবে ২০ হাজার টাকা। তবে তুরস্কেতে এসব কাজের বেতনের পাশাপাশি আরো বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এ সকল সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে:
- সামাজিক নিরাপত্তায় বিভিন্ন ধরনের বীমা লাভ করতে পারবেন। যেমন: স্বাস্থ্য বীমা ইত্যাদি।
- একজন তুর্কি শ্রমিক বছরের 14 দিন আইনিভাবে নিতে পারবেন তার মালিকের নিকট হতে এছাড়া বছরের সকল ছুটির দিনে শ্রমিকেরা ছুটি কাটাতে পারবেন।
- কোন শ্রমিক যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে সেক্ষেত্রে তিনি সব বিভিন্ন ধরনের সুবিধা লাভ করতে পারবেন ছুটি নেওয়ার সাথে।
তবে আপনাকে জেনে রাখতে হবে যে, তুরস্ক কাজের বেতন নির্ভর করে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার উপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে নিম্নক্ত কিছু কারণে বেতন কম বেশি হতে পারে:-
- পেশার ভিন্নতার ওপর ভিত্তি করে বেতন ভিন্ন হয়ে থাকে তুরস্কে। তুরস্কের শ্রমিকের আয়ের থেকে শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন তোর মূলকভাবে বেশি হয়ে থাকে।
- অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের বেতন তুলনামূলকভাবে অভিজ্ঞতাহীন ব্যক্তিদের থেকে বেশি হয়ে থাকে।
- যদি কোন কর্মী শিক্ষাগত যোগ্যতা অন্য কর্মী থেকে বেশি হয়ে থাকে তাহলে উক্ত কর্মী বেশি বেতন লাভ করবেন।
- ছোট শহরের কলকারখানার আর শ্রমিকের তুলনায় বড় শহরের কলকারখানার শ্রমিকদের বেশি বেতন প্রদান করা হয়ে থাকে।
- কোম্পানির উপর ভিত্তি করে বেতন কমবেশি হয়ে থাকে।
তুরস্ক কাজের বেতন যেমন একটু কম হয়ে থাকে তেমনি তুরস্কের মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক কম অর্থ ব্যয় হয়।
তুরস্কে কাজ করার সুযোগ
তুরস্কে কাজ করার জন্য অবশ্যই আপনার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা থাকতে হবে ও তুরস্কের চাকরির বিজ্ঞপ্তির অনুযায়ী একটি নিয়োগপত্র আপনার কাছে থাকতে হবে। আপনি যে সকল ওয়েবসাইটে তুরস্কের চাকরি সম্পর্কে জানতে পারবেন এরমধ্যে রয়েছে:
আপনি এ সকল ওয়েবসাইটে তুরস্কের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে জানতে পারবেন। এরপর আপনি নিয়োগপত্রের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী উক্ত প্রতিষ্ঠানে আবেদন করবেন। তবে এবার তুরস্কের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
তুরস্কের কাজের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
তুরস্কের কাছের ওয়াট পারমিট ভিসা না থাকলে আপনি তুরস্কে গিয়ে কাজ করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে তুরস্কের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আপনাকে তুরস্কের দূতাবাসে আবেদনপত্র ও বেশ কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। নিম্মে এ সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়েছে:
- তুরস্কের কাজের ভিসার জন্য আবেদনপত্র আপনাকে দূতাবাস থেকে সংগ্রহ করে সেটি পূরণ করে জমা দিতে হবে।
- তুরস্কের উত্তর যে প্রতিষ্ঠান আপনাকে কাজে নিয়োগ প্রদান করবে উত্তর প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদানকৃত একটি নিয়োগপত্রের ফটোকপি আপনাকে প্রদান করতে হবে।
- পাসপোর্ট এর ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
- তুরস্কের উত্তর যে কোম্পানিটির সাথে আপনার চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে উক্ত চুক্তিটির ফটোকপি আপনাকে প্রদান করতে হবে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট আপনাকে প্রদান করতে হবে।
- আপনার পাসপোর্ট সাইজের দুই থেকে চার কপি ছবি প্রয়োজন হতে পারে তবে আবেদনপত্রে নির্দেশনা অনুযায়ী আপনি প্রয়োজন মতো ছবি নিজের সংগ্রহে রাখুন। তবে ছবি অবশ্যই সদ্য তোলা রঙিন কবে হতে হবে।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি প্রয়োজন হতে পারে।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট এর ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
- আর্থিক সচ্ছলতা প্রমাণে আপনাকে আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্টের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
- সব শেষে আপনাকে তুরস্কের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ফি প্রদান করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ফি বর্তমানে কত এটি আপনি উক্ত আবেদন ফরর্মে জানতে পারবেন।
তুরস্কের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চেক
তুরস্কের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চেক আপনি ঘরে বসেই খুব করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন হবে একটি স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার। তুরস্কের ওয়াক পারমিট ভিসা চেক করার নিয়ম নিম্নে উপস্থাপন করা হয়েছে:
- https://evisa.gov.tr/en/status/ ওয়েবসাইটে লগ ইন করুন।
- বক্সের নির্দেশনা অনুযায়ী আপনি আপনার রেফারেন্স নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, ইমেইল ঠিকানা ও সিকিউরিটি কোড প্রদান করুন।
- সবশেষে আপনি Continue এ প্রেস করুন। আপনি Continue করার সাথে সাথে আপনার ভিসার বর্তমান অবস্থা আপনি দেখতে পাবেন।
বহু জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
তুরস্ক সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য রয়েছে যা আমাদের সকলের জেনে রাখা প্রয়োজন। এ সকল তথ্যের মধ্যে রয়েছে:
(১) তুরস্কের নতুন প্রেসিডেন্টের নাম কি?
উওর: রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ান।
(২) তুরস্কে যেতে কি ভিসা লাগবে?
উওর: হ্যাঁ,তুরস্কে যাবার জন্য ভিসার প্রয়োজন হয়।
(৩) তুরস্কের বর্তমান রাজধানীর নাম কি?
উওর: আঙ্কারা।
(৪) কাজের উদ্দেশ্যে কি তুরস্কে যাওয়া উচিত?
উওর: কাজের উদ্দেশ্যে তুরস্কে যাওয়া উচিত কিনা এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে উক্ত ব্যক্তির চাহিদার ও দক্ষতার উপর।
(৫) তুরস্কের মুদ্রার নাম কি?
উওর: তুরস্কের মুদ্রার নাম লিরা।
শেষ কথা
আশা করি আমরা আপনাকে,তুরস্ক কাজের বেতন কত ও তুরস্ক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছি। তবে আপনার যদি তুরস্ক কাজের বেতন কত এই পোস্টটি সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
আরও পড়ুন: