ভূত আছে হরেক রকমের, চমকে উঠবেন নাম শুনলে!


পৃথিবীতে নানা রকমের ভূত – তাই সবাইকে সাবধানে চলতে হবে। ভূতে ধরলে রক্ষা নেই।

ব্রহ্মদৈত্য ভূত একেবারেই ক্ষতিকারক নয়। ভূতের জগতে এদের সন্মান রয়েছে।

কোনও অবিবাহিত ধার্মিক ব্রাহ্মণ অপঘাতে মারা গেলে সে ব্রহ্মদৈত্য হয়। এ ধরনের ভূত কখনও মানুষকে ভয় দেখায় না। ব্রহ্মদৈত্য ভূত বেলগাছে নয়তো বটগাছে থাকে।

ব্রহ্মদৈত্য ভূতরা যদি কাউকে আশীর্বাদ করে, তাহলে তার ইচ্ছে পূরণ হয়। এই ভূতকে বিরক্ত করলে তারা ভয়ানক হয়ে ওঠে।

গেছো ভূতের বসবাস গাছের ডালে। আর ওই গাছের তলা দিয়ে কেউ গেলে তাকে এরা ভয় দেখায়। কখনও বা ল্যাংটা হয়ে এই ভূত ভ্যাংচি কাটে, তা দেখে যে কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: ট্রয় নগরী ধ্বংসের কারণ যা আজও বিস্ময়কর

পেতনি ভূত আরেক ধরনের। মনের কোনও ইচ্ছে পূরণ হওয়ার আগেই যদি মারা যায় কোনও মেয়ে, তাহলে নাকি সে পেতনি হয়। তারা যে কোনও রূপ ধারণ করতে পারে। পেতনিরা ছেলে সেজেও অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকে অন্ধকারে বাঁশবাগানে।

পেতনিদের পা পিছন দিকে ঘোরানো থাকে।

শাঁখচুন্নি নামে এক ধরনের ভূত আছে। জীবিতকালে আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়া বিবাহিত মহিলাদের অকালে মৃত্যু হলে তারা শাঁখচুন্নি ভূত হয়ে যায়। এই ভূত হাতে শাঁখা পরে থাকে।

শাঁখচুন্নি ভূতরা সব সময় ধনী ঘরের বিবাহিত নারীদের শরীরে ভর করার চেষ্টা করে।

কোন কোন ভূত মাছ খেতে খুব পছন্দ করে। এই ভূতদের বলা হয় মেছো ভূত।

গ্রামের যে সব পুকুরে বা জলাশয়ে প্রচুর মাছ, সেখানে বাস করে এরা। মেছো ভূতেরা অনেক সময় রান্নাঘরে ঢুকে কিংবা জেলেদের নৌকো থেকে মাছ চুরি করে খায়।

আরেকটা মজার ব্যাপার হলো, গ্রামেগঞ্জের কেউ হয়তো হাট থেকে মাছ কিনে বাড়ি ফিরছে, এদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে – সেই ক্ষণে মাছ লোভী এই ভূতেরা তার পিছনে -পিছনে যায় আর মাছ চায়।

আরও পড়ুন: ইংল্যান্ডের ভয়ংকর কয়েকটি ভূতের বাড়ি

পেঁচো ভূতের কাজই মানুষের ক্ষতি করা। এরা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের পেছনে লাগে। যে কোনও বাচ্চার উপর ভর করলে তখন বলা হয়, ওকে যে পেঁচো ভূতে পেয়েছে।

পেঁচো ভূতে পাওয়া বাচ্চা ছেলেমেয়েরা অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে।

আলেয়া নামের ভূতেরা কর্দমাক্ত জায়গায়, জলাভূমিতে, ঝোপঝাড়ে বসবাস করে। এরা পথ ভুলিয়ে মানুষজনকে টেনে নিয়ে আসে নিজের কাছে, তারপর নৃশংস ভাবে মেরে ফেলে।

গ্রামের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে পথচারীরা দেখতে পায়, দূরে কোথাও যেন আলো জ্বলছে। ওই আলো হলো আলেয়া ভূতেরই।

পথচারী ওই আলোর দিকে এগোতে থাকে। তারপর রাস্তা গুলিয়ে ফেলে একসময়। আর আলেয়া ভূত পাকড়াও করে ওই পথচারীকে।

মৃত মানুষকে জীবন্ত করে তোলা হয় মন্ত্র বলে। অবশ্য এটা বিশ্বাস করে আফ্রিকার ভুডু্বিশারদরা।ভুডুবিশারদরা মন্ত্রের সাহায্যে এই জোম্বিদের সৃষ্টি করে। এই ভূত অনেকটা সন্মোহিতের মতো আচরণ করে।

জোম্বি ভূতরা থপথপ করে হাঁটাচলা করে।

একটি মাত্র পা থাকে একানড়ে ভূতরদের। এ ধরনের ভূত মাটিতে হাঁটাচলা করার সময় লাঠিতে ভর দিয়ে চলাচল করে। একানড়ে ভূতেদের থাকার জায়গা হলো তালগাছ। এরা মানুষের কোনও ক্ষতি করে না।

জটাধারী ভূতেরা পানিতে থাকে। এরা পাকাপোক্ত ভাবে বাসা বাঁধে পুকুরের পানির নিচে।

পুকুরে স্নান করতে নেমে এদের বিরক্ত করলে এই ভূত ভীষণ রেগে যায়, তখন সেই মানুষটির পা নিজের জটায় পেঁচিয়ে পুকুরের নীচে টেনে এনে মেরে ফেলে।

স্কন্ধ কাটা ভূত মুণ্ডহীন হয়। সাধারণত ট্রেন দুর্ঘটনায় যাদের মাথা কাটা যায়, তারাই নাকি স্কন্ধকাটা ভূত হয়। এই ভূত ভয়ঙ্কর এবং ক্ষতিকারকও। লম্বা দু’টি হাত বাড়িয়ে এরা চলাচল করে। ঝোপঝাড় এদের খুব পছন্দের জায়গা। অনেক সময় মানুষ পাকড়াও করে ভয় দেখিয়ে তাকে দিয়ে নিজের মুন্ড খুঁজে বেড়ায়।

পিশাচ ভূত ঘুমন্ত মানুষের রক্ত চুষে খায়। রাতের বেলা এরা বাদুড়ের রূপ ধারণ করে আসে। তারপর গলায় দাঁত বসিয়ে রক্ত খেতে শুরু করে।

নিশি ভূত ভীষণ নৃশংস। রাত হলেই কোনো ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে সেই বাড়ির কাউকে তার অতি পরিচিত কারও গলা নকল করে ডাকতে থাকে। এরপর ওই মানুষটি বাইরে এলে তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায় না। জানা যায় না আদৌ কী ঘটল তার। হয়তো সে নিজেও একজন নিশি ভূত হয়ে যায়।