তামিম ইকবাল শো’তে আবাহনী-মোহামেডান উত্তেজনার স্মৃতিচারণ ওয়াসিম আকরামের


 

ওয়াসিম আকরাম এবং তামিম ইকবাল দুজনেই বিশ্ব ক্রিকেটের দুই প্রজন্মের বড় তারকা। যথাক্রমে পাকিস্থান এবং বাংলাদেশের। ওয়াসিম আকরাম, পাকিস্থান দলের সাবেক তারকা অলরাউন্ডার , তামিম ইকবাল শোতে কিছুক্ষণের জন্য এসেছিলেন। বাংলাদেশে ৯৫ সালে আবাহনীর হয়ে খেলতে এসেছিলেন সেই স্মৃতিচারনও করলেন। গত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ধারাভাষ্য দেয়ার সময়ও তিনি বাংলাদেশে খেলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলেন। তিনি সবসময় ভাল কথাই বলেন। তামিম সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে তাকে ধন্যবাদ দিয়ে সুন্দর সৌজন্যের পরিচয় দিয়েছেন।

ওয়াসিম আকরাম ৯০ এর দশকে ক্রিকেটে অনেক বড় আকর্ষণ ছিলেন। সেই সময়ে আবাহনীর কর্মকর্তারাও খুবই করিৎকর্মা ছিলেন। নেইল ফেয়ার ব্রাদার, ইয়ান সালিসবেরী, ওয়াসিম আক্রাম, অজয় জাদেজার মত তারকা ক্রিকেটাররা আবাহনীতে খেলেছেন। মোহামেডানে খেলেছেন রানাতুঙ্গা, জয়সুরিয়ার মত বিশ্বকাপ জয়ী তারকা। সেই সময়টা ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের সত্যিকারের এক জমজমাট উপাখ্যান।

৯৫ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে মোহামেডানের বিরুদ্ধে আবাহনীর হয়ে খেলা ওয়াসিম আকরামের ম্যাচটি মাঠে বসে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। প্রথমে ব্যাটিং করে আবাহনী আড়াইশোর আশেপাশের একটি বড় স্কোর করেছিল এখন আর সঠিক মনে নেই। ওয়াসিম আকরামের পেস বোলিংয়ের তোপে মোহামেডান কত রানে গুঠিয়ে যায় সেটাই দেখার ছিল। কিন্তু সেই ম্যাচে ওয়াসিম আকরামের নৈপূন্য চোখে পড়ার মত ছিলনা। যদিও তার বোলিং সবসময়ই ছিল ভয় জাগানিয়া। মোহামেডানের হয়ে পাকিস্থানী নাদিম ইউনুস ওয়াসিম আক্রামের বোলিং ভালই সামাল দেন। তবুও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকায় একসময় মোহামেডানের আট উইকেট পড়ে যায়। জয় থেকে তখনও মোহামেডানের দূরত্ব প্রায় ৭০ রানের।

তামিম ইকবাল

মোহামেডান নিশ্চিত হারছে এই ভাবনায় ঢাকা ষ্টেডিয়ামের পূর্ব গ্যালারী যা ছিল মোহামেডান গ্যালারী নামে পরিচিত প্রায় খালি হয়ে যায়। বেশিরভাগ দর্শকই বাড়ি চলে যান। খেলার ফলাফল অবধারিত মনে করে বিষন্ন মনে মোহামেডান সমর্থকরা ষ্টেডিয়াম ত্যাগ করেন। অল্প সংখ্যক অতি আত্মবিশ্বাসী সমর্থক ছাড়া।

কিন্তু ক্রিকেট যে গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা তা সেদিন বুঝা গেল বিটিভির রাত আটটার বাংলা সংবাদ দেখার সময়।

আরও পড়ুন: অধিনায়ক মাশরাফির বিশেষ গুণাবলী

সেসময়ে ঢাকার ঘরোয়া ক্রিকেটে বিদেশী কোটায় পাকিস্থানী খেলোয়াড়রা নিয়মিত খেলতেন। সেরকমই একজন শওকত মীর্জা নামের একজন অখ্যাত পাকিস্থানী ক্রিকেটার আট নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে দূর্দান্ত ব্যাটিংয়ের ঝলক দেখিয়ে সেই ম্যাচে মোহামেডানকে জয়ের মুখ দেখান। পরে আফসোস হয়েছিল ম্যাচটা মাঠে বসে শেষ পর্যন্ত না দেখার কারনে। আমার মত আরও অনেককেই হয়তো পরে পস্তাতে হয়েছিল। তামিম ইকবাল তখন হয়তো স্কুলের ছাত্র ছিলেন।

খালেদ মাসুদ,মিনহাজুল আবেদীন নান্নু,আকরাম খান, ওয়াসিম আকরাম ও তামিম ইকবাল
খালেদ মাসুদ,মিনহাজুল আবেদীন নান্নু,আকরাম খান, ওয়াসিম আকরাম ও তামিম ইকবাল

 

আরও পড়ুন:সাকিব আল হাসান: ক্ষুরধার ক্রিকেটীয় মস্তিষ্কই কী তাঁর সবচেয়ে বড় অস্ত্র?

তামিম ইকবাল বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পালন করছেন বেশ কিছুদিন থেকে। ইংরেজীতে কথা বলতে পারেন অনর্গল। এসেছেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্রগ্রাম থেকে। এক ক্রীড়ামোদী পরিবার থেকেই তার আবির্ভাব। চাচা আকরাম খান ছিলেন টেষ্ট পূর্ববর্তী আমলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক। বড় ভাই নাফিস ইকবাল বাংলাদেশের প্রথম টেষ্ট জয়ে রেখেছিলেন অন্যতম ভূমিকা। সেই পরিবারের যথার্থ উত্তরসূরী হিসাবে তামিম ইকবাল মাঠে ও মাঠের বাইরে যোগ্য ভূমিকা পালন করছেন।

ফেসবুক লাইভে তামিম ইকবাল এর এই অনুষ্ঠানের চমক হয়তো অব্যাহত থাকবে। তিনি যে অনেক পরিণত এবং ক্রিকেট নিয়ে তার অনেক জানাশোনা তা সত্যিই আশাপ্রদ।