সাকিব আল হাসান এর দল কলকাতা নাইট রাইডার্স জয় পেয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের প্রথম ম্যাচে । সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে ১০ রানে হারায় তারা। ব্যাটিংয়ে বড় রান করার সুযোগ পাননি।তবে বোলিংয়ে নেমে প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছেন সাকিব আল হাসান।
টসে জিতে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠান সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। কলকাতা ব্যাটিংয়ে সুন্দর সূচনা করে। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এনে দেন ৫৩ রান।
শুভম্যানগিল ১৩ বলে ১৫ রান করে আউট হলেও দিনটি ছিল অপর উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নীতেশ রানার। হায়দ্রাবাদের প্রায় সব বোলারদের বিরুদ্ধেই সচল ছিল নীতেশ রানার ব্যাট। যদিও রশিদখানকে কিছুটা সমীহ করে খেলেছেন।
৫৬ বলে ৮০ রানের ঝকঝকে ইনিংস উপহার দেন নীতেশ। শেষদিকে উইকেট কিছুটা স্লো হয়ে পড়ায় সেঞ্চুরীর দেখা পাননি তিনি। তাছাড়া দ্রুত রান তোলার একটা তাড়া ছিল। চারটি ছক্কার সাথে নয়টি চার মারেন নীতেশ। তার পারফরমেন্সের ঔজ্জ্বল্যে বাকিরা কিছুটা ম্লান হয়ে পড়েন।
অবশ্য রাহুল ত্রিপাতিও ষ্ট্রোকের ফুলঝুরি ছড়িয়েছেন। তিন নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে কলকাতার স্কোর অনেক দূর নিয়ে যান রাহুল। নীতেশের সাথে গড়েন ৯৩ রানের ঝুটি। প্রায় ১৮৩ ষ্ট্রাইক রেটে গড়া রাহুলের ২৯ বলে ৫৩ রানের ইনিংসটিই মূলত: দুই দলের মধ্যে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। ৫টি চার ও দুটি ছক্কাসমেত রাহুলের ক্যামিও ইনিংসটি পরবর্তীতে আন্দ্রে রাসেল এবং এউইন মরগ্যানের ব্যর্থতাকে চোখে পড়তে দেয়নি।
বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান ব্যাটিংয়ে নামেন ১৭.৪ ওভারে অধিনায়ক মরগ্যান আউট হলে। শেষ ১৪ বলের মধ্যে তিনি মোকাবেলা করেছেন ৫ বল। রান করেছেন ৩। যদিও শেষ বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারির কাছাকাছি ধরা পড়েন হায়দ্রাবাদের ফিল্ডার আব্দুল সামাদের হাতে। পরিস্থিতি অনুযায়ী তার কাছে আরও বিগ শট প্রত্যাশিত ছিল। কারন তারপরেও অলরাউন্ডার প্যাট কামিন্স ছিলেন কলকাতার ব্যাটিং লাইনআপে।
তবে ৬ নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে দীনেশ কার্তিক ৯ বলে ২২ রানের সময়োপযোগী একটি ক্যামিও খেলেন। দুটি চার ও একটি ছয়ের এই ইনিংসের কল্যাণে শেষ পর্যন্ত ১৮৭ রানের চ্যালেন্জিং স্কোর সংগ্রহ করে কলকাতা।
জয়ের লক্ষ্যে ১৮৮ রান করতে নেমে প্রত্যাশিত সূচনা পায়নি সানরাইজার্স। প্রথম ওভারেই হরভজনের বলে ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ ড্রপ করেন প্যাট কামিন্স। তবে দ্বিতীয় ওভারে কলকাতার প্রসিধ কৃষ্ণা ফিরিয়ে দেন ওয়ার্নারকে। ব্যক্তিগত ৩রানে উইকেটরক্ষক দিনেশ কার্তিকের হাতে কটবিহাইন্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ওয়ার্নার।
এদিকে প্রথম বলেই উইকেট মিলেছে সাকিবের । তৃতীয় ওভারে বল করতে এসেই চমক সৃষ্টি করেন সাকিব আল হাসান। তার প্রথম বলেই হায়দ্রাবাদের ঋদ্ধিমান সাহা প্লেইড অন হয়ে যান। এই ওভারটি প্রায় উইকেট মেইডেন পেয়ে যাচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। ওভারের শেষবলে একরান নিয়ে নেন জনি বেয়ারষ্টো।
জনি বেয়ারষ্টো অবশ্য মনীশ পান্ডেকে নিয়ে ম্যাচ প্রায় বের করে নিয়েছিলেন। দুইজনেই খেলেছেন সাবলীলভাবে। ছক্কা মেরেছেন ৩টি করে। জনি ৪ মেরেছেন ৫টি। আর মনীশ ২টি। এই দুইজনের ৯২ রানের জুটিতে হায়দ্রাবাদ জয়ের পথেই ছিল। তাতে ছেদ পড়ে জনি ৫০ রানে আউট হয়ে গেলে।
আরও পড়ুন: চট্রগ্রাম টেষ্টে বাংলাদেশের পরাজয়ের পাঁচটি কারন
শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য হায়দ্রাবাদের দরকার ছিল ৩৮ রান। তরুন বিগহিটিং ব্যাটসম্যান আব্দুল সামাদ তবু হাল ছেড় দেননি। ১৯তম ওভারে কলকাতার পেসবোলার কামিন্সকে মোকাবেলা করে দুটি ছক্কাসহ তুলে নেন ১৬রান। তবে শেষ ওভারে ২২ রানের টার্গেটে আন্দ্রে রাসেলের মিডিয়াম পেস বোলিংয়ের মোকাবেলায় চুড়ান্তভাবে ব্যর্থ হন হায়দ্রাবাদের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান।
ইনিংসের শেষ বলে মনীষপান্ডে ছক্কা হাঁকালেও জয় থেকে ১১ রান দূরে থাকতেই থেমে যেতে হয় হায়দ্রাবাদকে। শেষ পর্যন্ত তীব্র প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ম্যাচে ১০ রানের জয়ে এবারের আইপিএলে শুভসূচনা হয়েছে কলকাতার।
প্রথম বলেই উইকেট সাকিবের। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে যে কয়টি ম্যাচেই সুযোগ পাননা কেন তার সামর্থ্যের প্রতি সুবিচার করলে অনেক দূর যেতে পারবেন সাকিব আল হাসান।
খেলার পূর্ণ স্কোরকার্ড দেখুন এখানে