তামিম ইকবাল ও মিরাজের নৈপূন্যে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পরপর দুই ম্যাচে জয়লাভ করে সিরিজ জিতে নিয়েছে টাইগার বাহিনী। প্রথম ম্যাচে সাকিবের অলরাউন্ড পারফরমেন্সে নিরংকুশ জয়লাভ সহজ হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে বোলিংয়ে জ্বলে উঠলেন ক্রমেই সাকিবের উত্তরসূরী হিসাবে বিবেচিত হওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ। আর ব্যাটিংয়ে পরিণত মেজাজে খেলে হাফ সেঞ্চুরী করে দলের লক্ষ্যমাত্রা সহজে নামিয়ে আনেন তামিম ইকবাল।
দ্বিতীয় ম্যাচে কোন পরিবর্তন না এনে আগের ম্যাচের উইনিং কম্বিনেশন ধরে রাখেন বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে এই সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল কি না এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ওয়েষ্ট ইন্ডিজের নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতে দুর্বল এবং অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত বি সারির এই দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের উঠতি খেলোয়াড়দের একটি সুযোগ দেয়া যেত বলেই অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন সামাজিক মাধ্যমে।
টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ওয়েষ্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক। শুরুতেই বাংলাদেশের চেপেধরা বোলিংয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন ওয়েষ্টইন্ডিজের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদ্বয়। মুস্তাফিজ আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন এ ম্যাচেও। দলীয় ১০ রানের মাথায় ৬ রানে থাকা সুনীলকে মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান মুস্তাফিজ। দ্বিতীয় উইকেটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন যশোয়া সিলভা এবং কর্ণ অটলি। দ্বিতীয় উইকেটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন যশোয়া সিলভা এবং কর্ণ অটলি। দুজনে মিলে ছোটখাটো একটি পার্টনারশীপ গড়ে ২৬ রান জমা করেন স্কোর বোর্ডে।
কিন্তু বোলিংয়ে এসে দলে আসন স্থায়ী করার জন্য মুখিয়ে থাকা মিরাজ সুযোগটা কাজে লাগালেন দারুনভাবে। বাঁহাতি কর্ণ অটলী ব্যাটংয়ে থাকায় মিরাজকে বোলিংয়ে আনেন অধিনায়ক। যার প্রতিদান দিয়েছেন দারুনভাবে। কর্ণ অটলীকে ফেরত পাঠান অধিনায়কের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ২৪ রানে। ওয়েষ্ট ইন্ডিজের দলীয় রান তখন ৩৬। এরপর ১ রানের ব্যবধানে আরেকটি উইকেট তুলে নেন মিরাজ। যশোয়া সিলভাকে দারুনভাবে বোল্ড আউট করে। ৩ উইকেট হারিয়ে তখন পুরোপুরি ব্যাকফুটে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ।
সেটাকে আরেকটু দু:সহ বানিয়ে বোলিংয়ে এসেই আন্দ্রে ম্যাকার্থি এবং জেসন মুহাম্মদকে তুলে নেন সাকিব আল হাসান। কাইল মেয়ার্স এসেই রান আউটের খাড়ায় আটকা পড়েন। ১ উইকেটে ৩৬ থেকে কয়েক মুহুর্তেই ৫ উইকেটে ৪১ এ পরিণত হয় ক্যারিবিয়রা। ম্যাচের উত্তাপ অনেকটা শেষ এখানেই। ক্রমা বোনার আর রভম্যান পাওয়েল দলীয় ইনিংসটাকে একটি ভদ্রস্থ করার চেষ্টা করেছেন। শেষ উইকেট জুটিতে আলজাইর যোশেফ এবং আকিল হোসেইন ২৮ রানের পার্টনারশীপ গড়ে তাদের দলীয় স্কোর নিয়ে যান দেড়শ রানের কাছাকাছি (১৪৮)।
সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে তামিমের সাথে ভালই এগিয়ে যাচ্ছিলেন লিটন দাশ। চারটি ৪সহ ২২ রানে আকিল হোসেনের ঘূর্ণিতে এলবিডব্লু হয়ে যান দুর্ভাগ্যবশত। তিন নাম্বারে সুযোগ পেয়েছিলেন নাজমুল হোসাইন শান্ত। সহজ জয়ের টার্গেট আর নিজ মাঠে খেলা সত্ত্বেও বেশি দূর যেতে পারেননি। ১৭ রানের একটি ছোটাখাটো স্কোর গড়ে বিদায় নেন।
পরের অংশটুকু বাংলাদেশের পঞ্চপান্ডবদের অন্যতম তামিম, সাকিব আর মুশফিকের গল্পের পুনরাবৃত্তি। তামিম রয়েসয়ে খেলে মেপে মেপে ঠিক হাফ সেঞ্চুরী করলেন। এরপর রেইফারের একটি হাফভলি বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলে উইকেট রক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ক্রিজে স্থায়ী হয়ে যাবার পরও ম্যাচ শেষ করে না আসতে পারাটা পেশাদার ক্রিকেটে তামিমের পূর্ন মনোযোগের ঘাটতিটাকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। অন্যান্য বড় দলের খেলোয়াড়রা এরকম পরিস্থিতিতে নট আউট থেকেই ম্যাচ শেষ করে ফিরেন। চার উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার পান মেহেদী হাসান মিরাজ।