কিটো ডায়েট শুরু করতে চান অনেকেই। কিন্তু প্রতিদিনের খাবার ভাত-রুটি কিংবা চা বিস্কুটের বিকল্প নেই। তাই কেউ কেউ হয়তো শুরু করে আর চালাতে পারছেন না। কারন এই ডায়েটে আমাদের স্বাভাবিক খাবার পাওয়া কঠিন। তবে একটু কৌশলী হলেই অনেক বিকল্প খাবার পাওয়া যায়। তা আমাদের চিরায়ত ভেতো বাঙ্গালী কায়দায়। তাহলে আসুন জেনে নিই কিছু খাবার। যা হতে পারে ভাত-রুটি কিংবা চা-বিস্কুটের বিকল্প।
কিটো ডায়েটে ভাত-রুটির প্রধান বিকল্প:
ভাত কিংবা রুটিতে আছে পুরোটাই শর্করা কিংবা কার্বোহাইড্রেট। প্রধান খাদ্য হিসাবে আমরা ভাত খেয়ে আসছি জীবনভর। তাই ভাত খাওয়া ছাড়তে পারাটা কিটো ডায়েটের একটি বড় চ্যালেন্জ। তবে ভাতের বিকল্প হিসাবে কার্বোহাউড্রেট বা শর্করা নেই এমন কিছু সব্জি ব্যবহার করা যায়। পশ্চিমা দেশগুলোর সুপারমার্কেট গুলোতে এরকম কিছু ভাত পাওয়া যায় যা শর্করামুক্ত।
চাইলে ঘরে বসেই এরকম ভাত তৈরি করা যায়। আমাদের দেশের অতি পরিচিত সব্জি ফুলকপি ভাতের একটি আদর্শ বিকল্প। ফুলকপি খুবই ছোট করে কুচি কুচি করে কেটে ভাতের আকারে নিয়ে আসা যায়। এটি দেখতে সাদা। ফ্রাইংপেন বা কড়াইতে সামান্য একটু ঘি কিংবা বাটার দিয়ে ভেজে নিলেই ভাতের মত হয়ে যায়। সাথে কাচা মরিচ, পিয়াজ, ধনেপাতা এবং লবনও দেয়া যায়। এক প্লেটে সাদা ফুলকপি ভেজে প্লেটে নিয়ে ভাতের মতই খাওয়া যায়।
ইউরোপ কিংবা আমেরিকার সুপারমার্কেটে কলিফ্লাওয়ার রাইস কিংবা ভেজিটেবল রাইস পাওয়া যায়। সেসবে শর্করার উপস্থিতি খুবই কম। এছাড়া কংজান্ক রাইস নামে জাপানে তৈরি আরেকপ্রকার ভাত ও নুডলস পাওয়া যায়। যা পুরোপুরি ভাতের অবয়বে তৈরি। কিন্তু শর্করা নেই। সামান্য তেল কিংবা ঘি দিয়ে কড়াইতে ভেজে নিলেই খাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
কিটো ডায়েটে রুটি তৈরি অনেকটাই সহজ। শর্করামুক্ত অনেক প্রকারের ময়দা পাওয়া যায় বাজারে। এর মধ্যে সবচেয়ে সহজলভ্য হল কোকোনাট ফ্লাওয়ার কিংবা নারিকেলের ময়দা। কিটো ডায়েটে ভাত-রুটি চা-বিস্কুটের বিকল্প মূলত: এসবই। সাধারন সুপারমার্কেটগুলোতে পাওয়া যায় এই ময়দা। এর সাথে সামান্য পরিমান বাটার এবং এক চিমটি লবন মিশিয়ে গরম পানি সহকারে বানানো যায় মন্ড। এরপর পার্চম্যান্ট পেপার বা ট্রেসিং পেপারের ভিতরে রেখে দেয়া যায় রুটির আকৃতি। এরপর স্বাভাবিক রুটির ন্যায় ভেজে নিলেই তৈরি হয়ে যায় কিটো রুটি। এই রুটি বানানোর প্রক্রিয়া নিয়ে অসংখ্য ভিডিও আছে ইউটিউবে।
আরও পড়ুন: কিটো ডায়েটে কীভাবে দ্রুত ও কার্যকর পন্থায় ওজন কমাবেন?
চা বিস্কুটের বিকল্প:
কিটো ডায়েটে চা পান করা যায় ইচ্ছামত। তবে সেটা গ্রীণ টি। এই টি পানে ক্ষতি নেই বরং ওজন কমানোর প্রক্রিয়াটা ত্বরান্বিত হয়। গ্রীণ টি না থাকলে রং চাও হতে পারে এর বিকল্প। তবে দুধ চিনি ছাড়া অবশ্যই। এছাড়াও বুলেট কফি এককাপ খেলে ক্ষুধা লাগবে প্রায় ৪-৫ ঘন্টা।
কিটো ডায়েটে বিস্কুট তৈরির জন্য আছে অনেকগুলো বিকল্প উপায়। বিস্কুট তৈরির প্রধান উপকরন ময়দা। যেহেতু কিটো ডায়েটে গম থেকে তৈরি ময়দা খাওয়া যাবে না, আছে বিকল্প ময়দা। এক্ষেত্রে বাজারে পাওয়া যায় নারিকেল ময়দা, আলমন্ড ময়দা ইত্যাদি। বাটার, বিকল্প ময়দা এবং শর্করামুক্ত বিকল্প চিনি ব্যবহার করে ঘরেই বানানো যায় পছন্দের বিস্কুট। এই প্রক্রিয়ার অনেকগুলো ভিডিও আছে ফেসবুক এবং ইউটিউবে। সেসব দেখে সহজেই তৈরি করা যায় কিটো ডায়েটের বিস্কুট।
যদিও ভাত-রুটি কিংবা চা-বিস্কুটের অকৃত্রিম স্বাদ নেই, তবুও বিকল্প হিসাবে এগুলো চলনসই।